আইডিয়া, এয়ারটেল বা ভোডাফোন— আজ মোবাইল, কিছুদিনেই হয়তো ব্যাঙ্ক। ইঙ্গিত তেমনই।
সকলের কাছে ব্যাঙ্কের পরিষেবা পৌঁছে দিতে লেনদেন ব্যাঙ্ক বা ‘পেমেন্ট ব্যাঙ্ক’ চালু করতে চাইছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। তাদের নির্দেশিকা অনুযায়ী, মোবাইল পরিষেবা সংস্থাগুলিও এই পেমেন্ট ব্যাঙ্ক তৈরি করতে পারে। অন্যান্য ব্যাঙ্কের মতোই পেমেন্ট ব্যাঙ্কে সেভিংস বা কারেন্ট অ্যাকাউন্ট খোলা যাবে। তবে এই ব্যাঙ্কগুলি ঋণ দিতে পারবে না। আকাউন্টে সর্বাধিক কত টাকা রাখা যাবে, তা বেঁধে দেওয়া হবে।
এই ঘোষণার পরেই মোবাইল পরিষেবা সংস্থাগুলি পেমেন্ট ব্যাঙ্ক খোলায় উৎসাহ দেখাতে শুরু করেছে বলে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সূত্রের খবর। কয়েকটি সংস্থা বিভিন্ন বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়ে প্রশ্নও পাঠিয়েছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কর্তাদের ব্যাখ্যা, ভিন্ রাজ্যে কাজ করতে যাওয়া শ্রমিক-মজুররা অ্যাকাউন্ট খুলতে গিয়ে সমস্যায় পড়েন। সঞ্চয়ের পাশাপাশি বাড়িতে টাকা পাঠাতেও তাঁদের অসুবিধা হয়। পেমেন্ট ব্যাঙ্কের লক্ষ্য হবে এই শ্রেণির কাছে পৌঁছনো।
ব্যাঙ্ক বিশেষজ্ঞদের ব্যাখ্যা, মোবাইল পরিষেবা সংস্থাগুলির খুচরো বিক্রয়কেন্দ্র ছড়িয়ে রয়েছে প্রত্যন্ত এলাকাতেও। ব্যাঙ্ক পরিষেবায় সেই পরিকাঠামোকেই কাজে লাগানো যেতে পারে। মালদহ থেকে মুম্বইয়ে কাজ করতে গিয়ে কেউ যদি ৫ হাজার টাকা েমাবাইল সংস্থার বিক্রয়কেন্দ্রে জমা করে দেন, তবে মালদহের গ্রামে বসে তাঁর পরিবারের কেউ ওই মোবাইল সংস্থার কেন্দ্র থেকেই টাকা তুলে নিতে পারেন। ভোডাফোন ও এয়ারটেল অবশ্য ইতিমধ্যেই আর্থিক লেনদেনের পরিষেবা দেয়। বিল জমা দেওয়া, এক ফোন থেকে আর এক ফোনে রিচার্জ করানো গেলেও নগদ লেনদেনের সুযোগ এখনও নেই।
সাধারণ ব্যাঙ্ক খুলতে যেমন সব কিছু খতিয়ে দেখে লাইসেন্স দেওয়া হয়, পেমেন্ট ব্যাঙ্ক খোলার ক্ষেত্রেও রিজার্ভ ব্যাঙ্ক একই রকম কড়া নীতি নেবে। সংস্থাগুলিও চায়, সেই ‘ফিট অ্যান্ড প্রপার’ মানদণ্ড স্পষ্ট করা হোক। ব্যবসায়িক পরিকল্পনা সম্পর্কে অবশ্য সংস্থাগুলি এখনই কিছু বলতে নারাজ। তবে মোবাইল সংস্থাগুলির সংগঠন ‘সেলুলার অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন’ (সিওএআই)-এর বক্তব্য, আফ্রিকার মোবাইল সংস্থাগুলিকে ব্যাঙ্কিং পরিষেবার সুযোগ দেওয়ায় প্রত্যন্ত এলাকাতেও ব্যাঙ্কিং পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। এ দেশেও প্রচেষ্টা সফল হতে পারে।