ফাইল চিত্র।
গত বছর লকডাউনের ফলে সঙ্কোচনের বৃত্তে ঢুকেছিল ভারতের অর্থনীতি। প্রায় সমস্ত ক্ষেত্রের পণ্য ও পরিষেবার চাহিদা মাথা নামিয়েছিল। অক্টোবর থেকেই ছবি বদলাতে থাকে। ঘুরে দাঁড়ানোর বিভিন্ন লক্ষণ দেখা যায় বিভিন্ন সূচকে। কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সেই পরিস্থিতিকে অনেকটাই এলোমেলো করে দিয়েছে। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের এক নিবন্ধে এপ্রিল ও মে মাসে অর্থনীতি ধাক্কা খেয়েছে বলে মেনে নেওয়া হয়েছে। তবে একই সঙ্গে দাবি করা হয়েছে, আগের বছরের মতো আর্থিক কর্মকাণ্ড বিপর্যস্ত হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। পাশাপাশি সোমবারই মূল্যায়ন সংস্থা মুডি’জ় ইনভেস্টরস সার্ভিস তাদের রিপোর্টে জানিয়েছে, সংক্রমণের প্রভাব যদি আরও বাড়ে এবং তাকে ঠেকাতে লকডাউনের মেয়াদ বাড়াতে হয়, তা হলে শিল্প সংস্থাগুলির আয় ফের বিঘ্নিত হতে পারে। যেখানে রুপোলি রেখা দেখা যাচ্ছিল গত কয়েক মাসে।
গত বছরের মতো দেশব্যাপী লকডাউনের পথে এ দফায় হাঁটেনি কেন্দ্র। বরং বিভিন্ন রাজ্য স্থানীয় ভাবে লকডাউন করছে অথবা আরোপ করছে কড়া বিধিনিষেধ। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের নিবন্ধে দাবি করা হয়েছে, স্থানীয় লকডাউন, বাড়ি থেকে কাজ করা, পণ্য বাড়িতে সরবরাহ-সহ বিভিন্ন পরিকাঠামো আগের তুলনায় পোক্ত হওয়ায় অর্থনীতির উপরে আঘাত এসেছে আগের চেয়ে কম।
যদিও বিশেষজ্ঞদের একাংশ ইতিমধ্যেই সতর্ক করেছেন, এই সমস্ত স্থানীয় বিধিনিষেধের সামগ্রিক প্রভাব জাতীয় লকডাউনের প্রায় কাছাকাছি। সোমবার মুডি’জ়ও বলেছে, করোনা সংক্রমণ যে ভাবে মাথাচাড়া দিয়েছে তাতে মূল্যায়নযুক্ত সংস্থাগুলির ব্যবসাকে আগের জায়গায় নিয়ে যাওয়া বিঘ্নিত হতে পারে।
মুডি’জ়ের রিপোর্টে জোড়া আশঙ্কার কথা বলা হয়েছে। প্রথমত, কড়া বিধিনিষেধের ফলে বিক্রি কমতে পারে পরিবহণ জ্বালানির। ফলে উৎপাদন কমতে পারে শোধনাগারে। দ্বিতীয়ত, গাড়ি, আবাসনের মতো ক্ষেত্র ধাক্কা খেতে পারে সম্ভাব্য ক্রেতারা কেনার সিদ্ধান্ত স্থগিত করে দেওয়ায়। যার বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে ইস্পাত, সিমেন্ট, ধাতু এবং খনন শিল্পে। সব মিলিয়ে প্রত্যাশার তুলনায় আয় কমতে পারে বিভিন্ন ক্ষেত্রের সংস্থার। তবে জুনের মধ্যে করোনাকে নিয়ন্ত্রণে আনা গেলে তার পরে অর্থনীতির গতি ফের বাড়বে।