ফাইল চিত্র।
গত বছর লকডাউনের ধাক্কায় অর্থনীতি যখন বেসামাল তখন ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প (এমএসএমই)-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের জন্য ৩ লক্ষ কোটি টাকার সরকারি গ্যারান্টিযুক্ত ঋণ প্রকল্প ঘোষণা করেছিল কেন্দ্র। আনা হয়েছিল ঋণ পুনর্গঠন পরিকল্পনাও। গত ৫ মে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রকেও সুরাহা দিতে ব্যাঙ্কগুলিকে যথেষ্ট নগদ জোগানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস। রবিবার সেই ইমার্জেন্সি ক্রেডিট লাইন গ্যারান্টি স্কিমের (ইসিএলজিএস) পরিধি আরও বাড়ানোর কথা ঘোষণা করল অর্থ মন্ত্রক। সেই সঙ্গে জানাল, হাসপাতাল, নার্সিংহোম, ক্লিনিক, মেডিক্যাল কলেজ-সহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান নিজেদের জমিতে অক্সিজেন উৎপাদন প্ল্যান্ট বসাতে চাইলে তারাও এই ঋণ প্রকল্পের সুবিধা পাবে। যেখানে সুদের ঊর্ধ্বসীমা ৭.৫%। কোনও ব্যাঙ্ক চাইলে এর চেয়ে কম সুদও নিতে পারে।
এ দিন প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে দীর্ঘ দিন ধরে ধুঁকতে থাকা বিমান ক্ষেত্রকেও। বিমানমন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরির দাবি, বিমান সংস্থা, বিমানবন্দর ও এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত সংস্থাগুলিও কম সুদে ঋণ পাবে। ফলে তাদের কার্যকরী মূলধনের অনেকটাই সুরাহা হবে।
ব্যাঙ্কগুলিও জানিয়েছে, মে মাসের গোড়ায় শীর্ষ ব্যাঙ্কের ঘোষণা অনুযায়ী ২৫ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণের পুনর্গঠন প্রক্রিয়া শুরু করেছে তারা। যাতে বেশি সুবিধা পাবে ছোট সংস্থাগুলি। পাশাপাশি, চিকিৎসা পরিকাঠামো তৈরির জন্য কম সুদে সংস্থাগুলিকে ১০০ কোটি টাকা পর্যন্ত এবং করোনা চিকিৎসার জন্য ২৫,০০০ টাকা থেকে ৫ লক্ষ পর্যন্ত ব্যক্তিগত ঋণ প্রকল্পের কথাও জানিয়েছে ব্যাঙ্কগুলি। ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্কস অ্যাসোসিয়েশনের সিইও সুনীল মেহতা জানান, ব্যাঙ্কগুলি ইসিএলজিএস-এ এখনও পর্যন্ত ২.৫৪ লক্ষ কোটি টাকার ঋণ মঞ্জুর করেছে। ২.৪০ লক্ষ কোটি টাকা বণ্টন হয়েছে। আরও ৪৫,০০০ কোটি দেওয়া যাবে।
অতীতে এই প্রকল্পের মেয়াদ একাধিক বার বাড়িয়েছে কেন্দ্র। এ দিন তা তিন মাস বাড়িয়ে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত করার কথা জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রক। ঋণ মঞ্জুরের শেষ তারিখ ৩১ ডিসেম্বর। ইসিএলজিএস-এ এর আগে নেওয়া ঋণের ক্ষেত্রেও কিছু সুবিধার কথা ঘোষণা হয়েছে। অতীতে যে সমস্ত সংস্থা চার বছরের জন্য ঋণ নিয়েছিল এবং রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের ঘোষিত পুনর্গঠন প্রকল্পের যোগ্য, তাদের ঋণ শোধের মেয়াদ বাড়িয়ে পাঁচ বছর করা হয়েছে। যার মধ্যে প্রথম ২৪ মাস শুধু সুদ মেটালেই চলবে। পরের ৩৬ মাসে মেটাতে হবে অবশিষ্ট সুদ এবং আসল। যা আগে ছিল যথাক্রমে ১২ মাস এবং ৩৬ মাস। প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে যারা ঋণ নিয়েছে তাদের দেওয়া হচ্ছে বাড়তি সুবিধা। পুনর্গঠনের সুযোগের পাশাপাশি, ২০২০-এ ২৯ ফেব্রুয়ারির বকেয়া ঋণের ১০% ঋণ নিতে পারবে তারা। প্রকল্পের সুবিধা পেতে বকেয়া ঋণের অঙ্ক ৫০০ কোটির মধ্যে থাকার শর্ত তোলা হয়েছে। তবে সর্বোচ্চ ঋণ মিলবে বকেয়ার ৪০% ও ২০০ কোটি টাকার মধ্যে যেটি কম।