গৌতম আদানি। ফাইল ছবি।
আদানি-কাণ্ডের জেরে ব্যাঙ্কগুলিরও শেয়ার দর পড়ছিল। তাদের অনুৎপাদক সম্পদ (এনপিএ) মাথা তোলার আশঙ্কা আছে কি না, প্রশ্ন উঠেছিল তা নিয়েও। বুধবার এ ব্যাপারে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করলেন রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস। জানালেন, ভারতীয় ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার কলেবর যথেষ্ট বড় এবং ভিত শক্তিশালী। অন্য দিকে, আদানিদের সঙ্গে ৫০০০ কোটি ডলারের (৪.১০ লক্ষ কোটি টাকা) হাইড্রোজেন প্রকল্পের চুক্তি স্থগিত করেছে ফ্রান্সের টোটাল এনার্জিস।
হিন্ডেনবার্গের রিপোর্ট প্রকাশের পরে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন ওঠে, আদানি গোষ্ঠীর সংস্থাগুলিতে স্টেট ব্যাঙ্ক-সহ ভারতীয় ব্যাঙ্কগুলির কত ঋণ আছে। ব্যাঙ্কগুলি অবশ্য দাবি করে, বিভিন্ন সংস্থাকে দেওয়া ঋণের তুলনায় সেই অনুপাত যৎসামান্য। এ দিন শক্তিকান্ত জানান, শীর্ষ ব্যাঙ্ক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেছে। নির্দিষ্ট কোনও সংস্থায় ঋণের পরিমাণের ব্যাপারে যে নির্দেশিকা রয়েছে, তা মেনে চলছে ব্যাঙ্কগুলি। তিনি বলেন, ‘‘ভারতের ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা যথেষ্ট শক্তিশালী। আয়তনও বড়। এই ধরনের কোনও ঘটনায় নিজেদের মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতাও যথেষ্ট।’’
শীর্ষ ব্যাঙ্কের গভর্নর মনে করিয়ে দিয়েছেন, শেয়ার বাজারে মূলধনের নিরিখে কোনও সংস্থাকে ব্যাঙ্ক ধার দেয় না। ধার দেয় সংস্থার ভিত, আয়ের সম্ভাবনা-সহ বিভিন্ন বিষয়ের দিকে তাকিয়ে। গত কয়েক বছরে ঋণ দেওয়ার পদ্ধতিতেও অনেক উন্নতি করেছে ব্যাঙ্কগুলি। ঝুঁকি কমানোর বিষয়েও করেছে কিছু পদক্ষেপ। ডেপুটি গভর্নর এম কে জৈনের বক্তব্য, ব্যাঙ্কগুলির সামগ্রিক ঋণের তুলনায় একটি সংস্থাকে দেওয়া ঋণের অঙ্ক খুবই কম। তিনি বলেন, ‘‘ভারতীয় ব্যাঙ্কগুলি সংস্থার সম্পদ, নগদ এবং নির্মীয়মান প্রকল্পের ভিত্তিতে ঋণ দেয়। শেয়ার সম্পদের ভিত্তিতে নয়।’’
আদানি গোষ্ঠীর জন্য কি ব্যাঙ্কগুলিকে এনপিএ খাতে অতিরিক্ত সংস্থান করতে বলবে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক? শক্তিকান্তের মতে, ভারতীয় ব্যাঙ্কগুলি এ ব্যাপারে যথেষ্ট দক্ষ।
বন্ধকি শেয়ারের ভিত্তিতে নেওয়া ঋণের টাকা মেয়াদের আগে ফেরানোর সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর থেকে অবশ্য আদানি গোষ্ঠীর সংস্থাগুলির শেয়ার দর ফের মাথা তুলতে শুরু করেছে। এ দিনও তাদের ১০টি সংস্থার মধ্যে সাতটির দাম বেড়েছে। আদানি এন্টারপ্রাইজ়েস বেড়েছে ১৯.৭৬%। গত ২৫ জানুয়ারি থেকে সোমবার পর্যন্ত সংস্থার লগ্নিকারীরা মোট ৮.৭ লক্ষ কোটি টাকা খুইয়েছিলেন। গত দু’দিনে তাঁরা ফিরে পেয়েছেন প্রায় ৭০,০০০ কোটি টাকা।
টোটাল এনার্জিস জানিয়েছে, গত বছর জুনে আদানিদের সঙ্গে হাইড্রোজেন প্রকল্পের ঘোষণা হলেও এখনও পর্যন্ত কোনও চুক্তি সই হয়নি। হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টের ভিত্তিতে আদানি গোষ্ঠী যে অডিট শুরু করেছে, তার ফলাফল দেখে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে ফ্রান্সের সংস্থাটি।