প্রতীকী ছবি।
নোটবন্দি আর তড়িঘড়ি জিএসটি চালুর দরুন জোর ধাক্কা খাওয়া ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পের ক্ষতে মলম দিতে এক গুচ্ছ সুবিধার কথা ঋণনীতিতে ঘোষণা করল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। যার মধ্যে আছে শর্তসাপেক্ষে ব্যাঙ্ক সমেত বিভিন্ন আর্থিক সংস্থার ধার মেটানোর জন্য কিছুটা বাড়তি সময়। একই দিনে ওই শিল্পের নতুন সংজ্ঞা দিল কেন্দ্রও।
বুধবারই মন্ত্রিসভার বৈঠকের পরে ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পের সংজ্ঞা বদলে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। এত দিন কোন সংস্থা কী ধরনের শিল্প হিসেবে গণ্য হবে, তা কারখানা ও যন্ত্রপাতিতে লগ্নির অঙ্কের ভিত্তিতে ঠিক হত। কিন্তু নতুন নিয়মে তা ঠিক হবে বছরে তাদের ব্যবসার অঙ্কের ভিত্তিতে। যেমন, ৫ কোটি টাকা বা তার কম ব্যবসা হলে, তা হবে ক্ষুদ্র শিল্প। ব্যবসা ৫ কোটির বেশি থেকে ৭৫ কোটি টাকা পর্যন্ত হলে, তা ছোট শিল্প। আর ওই পরিমাণ ৭৫ কোটির বেশি থেকে ২৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত হলে, তাকে মাঝারি শিল্প হিসেবে ধরা হবে। এ দিন এ জন্য মন্ত্রিসভা আইন সংশোধনেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
কেন্দ্রের যুক্তি, এর ফলে ব্যবসার পরিবেশ উন্নত হবে। কারণ, এতে ব্যবসা বাড়ার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে সংস্থার শ্রেণি বদলাবে। উল্লেখ্য, বাজেটে ২৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত ব্যবসায় কোম্পানি কর ৩০% থেকে কমিয়ে ২৫% করেছেন অর্থমন্ত্রী।
কেন্দ্র যে দিন সংজ্ঞা বদলের কথা জানিয়েছে, সে দিন তাদের ক্ষতে প্রলেপ দিতে এক গুচ্ছ সুবিধার কথা বলেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্কও। যেমন তারা জানিয়েছে, ২০১৭ সালের ৩১ অগস্টের আগে যারা ছোট-মাঝারি শিল্পের তকমা পেত, তাদের যদি ২০১৮-র ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ব্যাঙ্ক সমেত বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে ২৫ কোটি টাকার বেশি বকেয়া না থাকে, তবে সে ক্ষেত্রে বিভিন্ন শর্ত সাপেক্ষে ধার মেটানোর জন্য ১৮০ দিন বাড়তি সময় পাবে তারা। তবে এ ক্ষেত্রে সংস্থাটিকে জিএসটিতে নথিভুক্ত অবশ্যই হতে হবে।
সংজ্ঞা মূলধন (টাকায়)
ক্ষুদ্র ৫ কোটি পর্যন্ত
ছোট ৫ কোটির বেশি থেকে ৭৫ কোটি পর্যন্ত
মাঝারি ৭৫ কোটির বেশি থেকে ২৫০ কোটি পর্যন্ত
স্বস্তি ঋণনীতিতে
ব্যাঙ্ক, আর্থিক সংস্থার ঋণ মেটাতে বাড়তি সময় ১৮০ দিন
তার জন্য শর্ত
চাই জিএসটি নথিভুক্তি
৩১ জানুয়ারি, ২০১৮ পর্যন্ত হিসেবে ব্যাঙ্ক, আর্থিক সংস্থার ঋণ ২৫ কোটি টাকা পর্যন্ত
শোধ করার কথা ছিল ১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ থেকে ৩১ জানুয়ারি ২০১৮-র মধ্যে
অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ধার পাওয়ার ক্ষেত্রে ছোট-মাঝারি পরিষেবা সংস্থাগুলির ঋণের ঊর্ধ্বসীমাও শিথিল করার কথা বলেছে শীর্ষ ব্যাঙ্ক। আরবিআই ডেপুটি গভর্নর এন এস বিশ্বনাথন বলেছেন, জিএসটি জমানায় তাল মেলাতে গোড়ায় হোঁচট খেতে হয়েছে ছোট-মাঝারি শিল্পকে। টান পড়েছে নগদে। অথচ অর্থনীতির তারা অন্যতম চালিকাশক্তি। কর্মসংস্থানের মূল ইঞ্জিন। তাই তাদের সমস্যা কিছুটা সুরাহা করতেই এই বন্দোবস্ত বলে দাবি শীর্ষ ব্যাঙ্কের।