মুকেশ অম্বানী—ফাইল চিত্র
লক্ষ্য ছিল আগামী মার্চ। রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ়ের নিট ঋণ শূন্যে নামিয়ে আনার জন্য গত অগস্টে শেয়ারহোল্ডারদের সামনে তেমনটাই বলেছিলেন কর্ণধার মুকেশ অম্বানী। কিন্তু তার বহু আগে, এই করোনা সঙ্কটের মধ্যেই লক্ষ্য পূরণ হয়ে গিয়েছে বলে শুক্রবার দাবি করলেন তিনি। গত মার্চের হিসেব অনুযায়ী সংস্থার ঘাড়ে ছিল ১.৬১,০৩৫ কোটি টাকার নিট ঋণ। এ দিন মুকেশ জানান, দু’মাসেরও কম সময় সংস্থার অংশীদারি বেচে জোগাড় হয়েছে রেকর্ড ১.৬৯ কোটি। নজির গড়ে ১.১৫ লক্ষ কোটিই তুলেছেন দেশ ঘরবন্দি থাকাকালীন ফেসবুক, কেকেআর, ভিস্তা, সিলভার লেক-সহ একাধিক আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি ও লগ্নিকারী সংস্থার হাতে জিয়ো প্ল্যাটফর্মের প্রায় ২৫% অংশীদারি তুলে দিয়ে।
আজ মুকেশের ঘোষণার পরেই ৬ শতাংশেরও বেশি ওঠে রিলায়্যান্সের শেয়ার দর। প্রথম ভারতীয় সংস্থা হিসেবে ১১ লক্ষ কোটি টাকা পেরোয় শেয়ার মূলধন। বিএসই-তে প্রতিটি শেয়ারের দর হয় ১৭৫৯.৫০ টাকা।
সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, করোনার ধাক্কা বিশ্ব বাজারে তেলের দরকে টেনে নামানোর পরে প্রমাদ গুনেছিলেন মুকেশ। কারণ, তাঁর তেল ব্যবসাও লোকসান গুনেছে এর জেরে। বাজারে তখন চাহিদা, বিক্রি কিচ্ছু নেই। তার উপরে এটাও স্পষ্ট যে, এই বাজারে সৌদি অ্যারামকোকে তেল ব্যবসার অংশীদারি বিক্রি করে ১৫০০ কোটি ডলার তোলার পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হওয়ার সম্ভাবনা নেই এখনই। শিল্প সূত্রের দাবি, যে কারণে জিয়ো প্ল্যাটফর্মের ডিজিটাল ব্যবসার আকর্ষণকে কাজে লাগিয়ে তড়িঘড়ি টাকা সংগ্রহে নেমেছিলেন মুকেশ। করোনা সঙ্কটের মধ্যেই।
আজ বিবৃতিতে মুকেশের বার্তা, আগামী দিনে বৃদ্ধির আরও উঁচু লক্ষ্য বেঁধে, তাকেও ছোঁবে রিলায়্যান্স। লগ্নিকারীদের আগ্রহে ভর ধরে পাঁচ বছরের মধ্যে জিয়ো ও রিলায়্যান্স রিটেলে শেয়ার বাজারে নথিবদ্ধ হতে দৌড়বে। জিয়ো ইনফোকমকে মার্কিন বাজারে নথিবদ্ধ করতে চেষ্টার কথাও জানা গিয়েছে আগেই।
রিলায়্যান্স জানিয়েছে, গত ৫৮ দিনে প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলির হাতে এই ব্যবসার অংশীদারি তুলে দিয়ে উঠেছে ১.১৫ লক্ষ কোটি ও রিলায়্যান্সের বর্তমান শেয়ারহোল্ডারদের শেয়ার বেচে (রাইটস ইসু) ৫৩,১২৪ কোটি টাকা। এর সঙ্গে গত বছর খুচরো জ্বালানি বিক্রির ব্যবসার ৪৯% অংশীদারি ব্রিটেনের তেল সংস্থা বিপি-কে বিক্রি করে পাওয়া ৭০০০ কোটি যোগ করে ঝুলিতে এসেছে ১.৭৫ লক্ষ কোটি।