সাধারণত শিল্প বা রাজনৈতিক স্তরের কোনও মন্তব্য বা ছোটখাটো ঘটনারও বড় প্রভাব পড়ে শেয়ার সূচকে। অথচ গত কয়েক সপ্তাহ ধরে এমনটা কিন্তু ঘটছে না।
অর্থনীতির দিক থেকে প্রতিনিয়ত খারাপ খবর আসছে। রাজনৈতিক পরিস্থিতি অশান্ত। এই সব ঘটনাকে উপেক্ষা করেই উঠে চলেছে দুই শেয়ার সূচক। গড়ছে নজির। বিশেষজ্ঞেরাও অবাক। কেউ কেউ বলছেন, আগামী অর্থবর্ষে অর্থনীতিতে আবার প্রাণ ফিরবে। বাড়বে চাহিদা ও উৎপাদন। কেন্দ্রের ত্রাণ প্রকল্পের প্রতিফলন দেখা যাবে নানা শিল্পে। পাশাপাশি, আরও কিছু ত্রাণ ও সংস্কারের প্রত্যাশা করা হচ্ছে। এ সব কথা মাথায় রেখে লগ্নিকারীরা বিনিয়োগ করছেন।
বিশ্ব বাজারও অবশ্য অনুকূল। শুল্ক-যুদ্ধের সমাধানের পথে কিছুটা এগিয়েছে আমেরিকা ও চিন। তারও ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে ভারতের বাজারে। পর পর কয়েক দিন টানা উঠে শুক্রবার সেনসেক্স থামে ৪১,৬৮১.৫৪ পয়েন্টে। নিফ্টি ছিল ১২,২৭১.৮০ অঙ্কে। তবে বাজারের যা আচরণ, তাতে এর পরে সূচক কোন পথে হাঁটবে তা এখনই বোঝা যাচ্ছে না। বাজার রেকর্ড গড়লেও সব ইকুইটি ফান্ডের লগ্নিকারীরা কিন্তু তেমন লাভের সন্ধান পাননি। বিশেষ করে মিড ও স্মল ক্যাপ শেয়ার নির্ভর ফান্ডগুলিতে।
এ দিকে, ২০২০-২১ অর্থবর্ষের বাজেট পেশ হতে প্রায় এক মাস বাকি। তার আগে নানা মহলের সঙ্গে কথা বলছে কেন্দ্র। বণিকসভা ফিকি চাইছে বছরে ২০ লক্ষ টাকার কম আয়ের মানুষদের আয়করে কিছুটা ছাড় দেওয়া হোক। আবার শ্রমিক সংগঠনগুলির অনুরোধ, করমুক্ত আয়ের সীমা বেড়ে ১০ লক্ষ হোক। সেই সঙ্গে ন্যূনতম মজুরি ২১,০০০ টাকা ও পেনশন ৬,০০০ টাকার দাবি তো আছেই। অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে সম্প্রতি কর্পোরেট কর কমিয়েছে কেন্দ্র। অনেকেরই আশা, এ বার কমানো হতে পারে ব্যক্তিগত করও। সে ক্ষেত্রে মানুষের হাতে বেশি টাকা থাকলে তা পণ্যের চাহিদা বাড়াতে সাহায্য করবে।
নতুন বছরের প্রথম তিন মাসে স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পগুলির সুদের হার ঘোষণা হবে শীঘ্রই। মূল্যবৃদ্ধির জন্য ডিসেম্বরে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক নতুন করে সুদ ছাঁটাই করেনি। স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পে সরকার কী সিদ্ধান্ত নেয়, তা-ই এখন দেখার। ব্যাঙ্ক ও গৃহঋণ সংস্থাগুলি সম্প্রতি দফায় দফায় তাদের জমা প্রকল্পগুলিতে সুদ কমানোর পর স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পগুলিতে সুদের হার ১ থেকে ১.৫% বেশি।
(মতামত ব্যক্তিগত)