ফাইল চিত্র।
অতিমারির জেরে দেশের আর্থিক ক্ষেত্রে পরিস্থিতির পরিবর্তন হচ্ছে দ্রুত। সেই প্রেক্ষিতে একাধিক চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে হচ্ছে ব্যাঙ্কিং শিল্পকেও। এক দিকে যেমন রয়েছে বেশি কিছু অনিশ্চয়তা, তেমনই অন্য দিকে রয়েছে গোটা আর্থিক ব্যবস্থার ঘুরে দাঁড়ানোর রসদ। যেখানে অর্থনীতিতে চাহিদা মাথা তোলার ফলে বাড়বে ব্যাঙ্ক ঋণের চাহিদাও। তার উপরে নির্ভর করে ব্যবসা এবং হিসাবের খাতাও শক্তপোক্ত করতে পারবে ব্যাঙ্কগুলি। আবার ব্যবসার এই সুযোগ বৃদ্ধির পাশাপাশি রয়েছে অনুৎপাদক সম্পদ (এনপিএ), ঋণ খেলাপ-সহ বিভিন্ন ঝুঁকিও। এই অবস্থায় ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রকে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের পরামর্শ, ঝুঁকির বিষয়গুলি মাথায় রেখে, উন্নত তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বাড়িয়ে এবং আইন মেনে ব্যাঙ্ক পরিচালনার পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে। মঙ্গলবার ‘ট্রেন্ডস অ্যান্ড প্রগ্রেস অব ব্যাঙ্কিং ইন ইন্ডিয়া, ২০২০-২১’ রিপোর্ট প্রকাশ করেছে তারা।
লকডাউনের কারণে সঙ্কুচিত হয়েছিল দেশের অর্থনীতি। তলানিতে চলে গিয়েছিল বিশেষ করে শিল্প ঋণের চাহিদা। কিন্তু অতিমারির দ্বিতীয় ঢেউ কেটে যাওয়ার পরে আর্থনীতির চাকা ঘুরতে শুরু করেছে। ধীরে হলেও চাহিদা বাড়তে শুরু করছে ঋণের। যা আগামী দিনে আরও বাড়বে বলেই মনে করছে শীর্ষ ব্যাঙ্ক। তবে তারা মনে করিয়ে দিয়েছে, এর সঙ্গে জড়িয়ে থাকবে ঝুঁকি। তাদের পরামর্শ, এর জন্য মূলধনের ভিত মজবুত রাখা জরুরি। ঋণ এনপিএ-তে পরিণত হলে তার জন্য আর্থিক সংস্থান করতে হয় ব্যাঙ্কগুলিকে। এর বিরূপ প্রভাব পড়ে মূলধনের উপরে। আবার বেশি ঋণ দিতে গেলেও মূলধনের ভিত পোক্ত হতে হবে। তার জন্য দরকার যথেষ্ট পরিমাণ পুঁজি। অবশ্য শীর্ষ ব্যাঙ্ক এ-ও মেনে নিয়েছে যে, গত ৩০ সেপ্টেম্বরের হিসাব অনুযায়ী রাষ্ট্রায়ত্ত এবং বেসরকারি উভয় ব্যাঙ্কেরই সংরক্ষিত মূলধন তহবিলের (ক্যাপিটাল কনজ়ারভেশন বাফার) হার ২.৫ শতাংশের বেশি রয়েছে। যা যথেষ্ট সন্তোষজনক। কিন্তু তাদের রিপোর্টে আরও মূলধন জোগাড়ের জন্য ব্যাঙ্কগুলিকে নিজেদেরই উদ্যোগী হতে পরামর্শ দিয়েছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। যে পরামর্শ একটা সময়ে কেন্দ্রও দিয়েছিল ব্যাঙ্কগুলিকে। সূত্রের বক্তব্য, আগামী বাজেটে কেন্দ্র আলাদা ভাবে ব্যাঙ্কগুলির জন্য পুঁজি ঢালার বরাদ্দ করবে না, এমন সম্ভাবনাও রয়েছে। শীর্ষ ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, চলতি অর্থবর্ষের প্রথমার্ধে ব্যাঙ্ক জালিয়াতির সংখ্যা ৪০৭১। আগের বছর তা ছিল ৩৪৯৯।
পাশাপাশি, আগামী দিনে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে সমবায় ব্যাঙ্কগুলির ভূমিকাও বাড়বে বলে মনে করে শীর্ষ ব্যাঙ্ক। গ্রামীণ এবং সাধারণ মানুষদের ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে সমবায় ব্যাঙ্কগুলি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করছে তারা।