প্রতীকী ছবি।
দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, চাকরিবাকরির অবস্থা, জিনিসপত্রের দাম আর মাইনে নিয়ে রীতিমতো হতাশ আমজনতা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকারের উপর উত্তরোত্তর আস্থা হারিয়ে ফেলছেন সাধারণ মানুষ।
সেই আস্থা গত সেপ্টেম্বরে যে তলানিতে পৌঁছেছে, গত ছয় বছরে আর নামেনি ততটা। যার অর্থ, দ্বিতীয় ইউপিএ জমানাতেও এই সব ব্যাপারে আমজনতার যেটুকু আস্থা ছিল, মোদী জমানায় সেইটুকুও নেই। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের (আরবিআই) একেবারে হালের একটি সমীক্ষা এ কথা জানিয়েছে।
নাগরিকরাই দেশের বাজারে পণ্যের প্রধান ক্রেতা (কনজিউমার)। তাই তাঁদের আস্থার (কনফিডেন্স) পরিমাপ করে নিয়মিতই দেশের অর্থনৈতিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে আরবিআই। আর তা মাপা হয় ‘কারেন্ট সিচুয়েশন ইনডেক্স (সিসিআই)’ দিয়ে। দেশের প্রধান শহরগুলির নাগরিকদের মতামতের ভিত্তিতে।
সেই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে গিয়ে আরবিআই দেখেছে, দ্বিতীয় ইউপিএ জমানায়, ২০১৩-র সেপ্টেম্বরে সেই ‘সিসিআই’ বা সূচক ছিল ৮৮।
আরও পড়ুন- বৃদ্ধির পূর্বাভাস ছাঁটাইয়ের জেরে ধাক্কা বাজারে, আরও সুদ কমার বার্তা
আরও পড়ুন- সুদ কমাল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, ছাঁটল বৃদ্ধি
তার পর থেকে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ওই সূচক চড়েছে। ১০০-র উপরেই থেকেছে। কিন্তু এই বছরের সেপ্টেম্বরে সেই সূচক নেমে পৌঁছেছে ৮৯.৪-এ।
ওই সূচকের বাড়া-কমার ট্রেন্ড দেখাচ্ছে, প্রথম মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশের অর্থনৈতিক স্বাস্থ্য ও তার ভবিষ্যৎ নিয়ে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা অনেকটাই বেড়ে গিয়েছিল। ২০১৪-র সেপ্টেম্বরে সেই সূচক পৌঁছেছিল ১০৩.১-এ। ২০১৬-র ডিসেম্বর পর্যন্ত সেই সূচক ১০০-র উপরেই ছিল। কিন্তু সেই বছরের নভেম্বরে নোটবন্দির ঘোষণার পর কাজের কাজ কিছু হল না দেখে আমজনতার প্রত্যাশা কমতে শুরু করে। সেই অবস্থাটা চলেছিল আড়াই বছর। ৩০ মাস পর এ বছর লোকসভা ভোটের আগে, মার্চে সেই সূচক বেড়ে পৌঁছয় ১০৪.৬-এ।
কিন্তু মে মাস থেকেই তা নামতে শুরু করে। গত মে মাসে সেই সূচক ছিল ৯৭.৩। জুলাইয়ে তা আরও কমে হয় ৯৫.৭। যা সেপ্টেম্বরে আরও নেমে পৌঁছেছে ৮৯.৪-এ।
কনজিউমার কনফিডেন্স ইনডেক্সের (সিসিআই) আরও একটি দিক রয়েছে। তার নাম- ‘ফিউচার এক্সপেকটেশন্স ইনডেক্স (এফইআই)’। দেখা যাচ্ছে, আগামী দিনে ভারতের অর্থনীতি আগামী দিনে ঘুরে দাঁড়াবে, সেই আশাও কমতে শুরু করেছে আমজনতার। ওই সূচক এ বছরের জুলাইয়ে ছিল ১২৪.৮। যা সেপ্টেম্বরে নেমে পৌঁছেছে ১১৮-এ।