রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। —ফাইল চিত্র।
রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের থেকে ডিভিডেন্ড বা তাদের মুনাফার ভাগ হিসাবে যে টাকা কেন্দ্র পাবে তা যদি চলতি অর্থবর্ষে রাজকোষ ঘাটতি কমাতে খরচ করা হয়, তা হলে ভারতের মূল্যায়ন বাড়াতে পারে সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি। বৃহস্পতিবার এই বার্তা দিল মূল্যায়ন বহুজাতিক এসঅ্যান্ডপি। তবে বাস্তবে ওই টাকায় ঘাটতি কতটা কমানো যাবে, তা নিয়ে সংশয়ও প্রকাশ করেছে তারা। কারণ, সংস্থাটির ধারণা বিলগ্নিকরণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার আশঙ্কা এবং সরকার গড়ার পরে চূড়ান্ত বাজেটে খরচের খাতে অতিরিক্ত বরাদ্দ সেই পথে কাঁটা হতে পারে। অর্থনীতিবিদরাও বিষয়টি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। একাংশের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের অব্যবহৃত টাকা অর্থনীতিকে পোক্ত করার কাজে লাগানো ইতিবাচক। তাতে উন্নয়নে গতি আসবে। তবে অন্য অংশের আশঙ্কা, অজানা ভবিষ্যতের সমস্যা সামলাতে সরিয়ে রাখা তহবিলে কোপ পড়লে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে সেই সুরক্ষারই অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত।
গত আর্থিক বছরের জন্য আরবিআই নিজেদের মুনাফা থেকে রেকর্ড অঙ্কের ২.১০ লক্ষ কোটি টাকা ডিভিডেন্ড তুলে দিতে চলেছে কেন্দ্রের হাতে। যা চলতি অর্থবর্ষে খরচ করতে পারবে তারা। তবে উদ্বেগ প্রকাশ করে অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকার বলছেন, “এত টাকা রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক তার মুনাফা থেকে দিয়েছে, এটা আমি মনে করছি না। ওই টাকার একটা বড় অংশ সংরক্ষিত তহবিল থেকে তারা দিয়েছে বলেই আমার ধারণা। এটা ঠিক যে, তা হাতে পাওয়ার পর বাজার থেকে ঋণ কম করতে হবে কেন্দ্রকে। সে ক্ষেত্রে কমবে সুদের হার। তাতে বাজারে সার্বিক ভাবে সুদ কমতে পারে। শিল্পে বাড়তে পারে লগ্নি। কিন্তু পাশাপাশি অতিরিক্ত টাকা কেন্দ্র খরচ করলে তা ইন্ধন জোগাবে মূল্যবৃদ্ধিতে।’’
তবে অর্থনীতিবিদ অজিতাভ রায়চৌধুরী মনে করেন, “বিশ্ব জুড়েই কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক মুনাফার টাকা সরকারকে দেয়। আশা করি রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কও আন্তর্জাতিক নীতি মেনেই সরকারকে টাকা দিয়ছে। তা ছাড়া আরবিআইয়ের কাছে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি টাকা থাকলে তা অব্যবহৃত থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সরকার টাকা পরিকাঠামো-সহ উন্নয়নমূলক কাজে খরচ করলে তা দেশের উন্নয়নে গতি আনবে। তবে অভিজ্ঞতা হল, ওই টাকার কতটা উন্নয়নমূলক কাজে খরচ হবে এবং কতটা জনমোহিনী খাতে খরচ হবে, তার হিসাব অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আমরা জানতে পারি না।’’