—প্রতীকী ছবি।
ঋণগ্রহীতা সময়মতো বকেয়া কিংবা তার কিস্তি মেটাতে না পারলে তার জন্য জরিমানা চাপায় ব্যাঙ্ক বা ব্যাঙ্ক নয় এমন আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি (এনবিএফসি)। তবে অনেক সময় তাদের বিরুদ্ধে মাত্রাতিরিক্ত জরিমানা চাপানোর অভিযোগ ওঠে। গত ১৮ অগস্ট ঋণ সংক্রান্ত বিধি সংশোধন করে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক স্পষ্ট জানায়, জরিমানাকে আয় বৃদ্ধির উপায় হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে না নথিভুক্ত ব্যাঙ্ক ও এনবিএফসিগুলি। সম্প্রতি পরিবর্তিত এই বিধি রূপায়ণের জন্য সংস্থাগুলিকে আরও তিন মাস সময় দিয়েছে শীর্ষ ব্যাঙ্ক। তারা জানিয়েছে, নতুন ঋণগ্রহীতাদের ক্ষেত্রে ১ এপ্রিলের মধ্যে বিধি কার্যকর করতে হবে। আর পুরনোদের ক্ষেত্রে ৩০ জুনের বেশি দেরি করা যাবে না। ক্রেডিট কার্ড, বাণিজ্য ঋণ-সহ কিছু ক্ষেত্রে এই সমস্ত বিধি কার্যকর হবে না। মঙ্গলবার অন্য এক বিজ্ঞপ্তিতে শীর্ষ ব্যাঙ্কের পরামর্শ, রাজ্যগুলি তাদের অধীনে থাকা সংস্থা বা স্থানীয় প্রশাসনের নেওয়া ঋণের জন্য ‘গ্যারান্টি’ দিলে তার জন্য ন্যূনতম ফি নেওয়া উচিত।
পরিবর্তিত বিধি সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে শীর্ষ ব্যাঙ্ক স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, ঋণখেলাপি হলে নথিভুক্ত ঋণদাতারা জরিমানা চাপাতে পারবে ঠিকই, কিন্তু তার অঙ্ক ‘যুক্তিযুক্ত’ এবং ঋণের অঙ্কের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হতে হবে। যদিও জরিমানার অঙ্ক কিংবা তার ঊর্ধ্বসীমা কত হবে সে ব্যাপারে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক কোনও নির্দেশ দেয়নি। শুধু বলেছে, ঋণদানকারী সংস্থাগুলির পর্ষদকে এই সংক্রান্ত নীতি চূড়ান্ত করতে হবে। তা যেন ঋণগ্রহীতাকে দেওয়া চুক্তিপত্রেও স্পষ্ট ভাবে ব্যাখ্যা করা থাকে। শুধু সংস্থার ওয়েবসাইটে তা থাকলেই চলবে না এবং চুক্তিপত্রে ওয়েবসাইটের সেই তথ্যের উল্লেখটুকু রেখে দায়িত্ব সারলে চলবে না। সেই সঙ্গে শীর্ষ ব্যাঙ্কের স্পষ্ট বার্তা, জরিমানাকে ব্যবসা বাড়ানোর অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। তার উদ্দেশ্য হতে হবে গ্রাহকের মধ্যে ঋণের নিয়মানুবর্তিতা তৈরি করা।
পরিবর্তিত বিধি স্পষ্ট করতে কয়েকটি প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে তা ব্যাখ্যা করেছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। সেখানে জানানো হয়েছে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে গ্রাহক যে আসল এবং সুদ জমা দিতে পারেননি, তা শোধ করার আগে পর্যন্ত ঋণদাতারা তার উপরে সুদ যোগ করতেই পারে। তা হবে ঋণ প্রকল্পের সুদের হার অনুযায়ী। জরিমানা হিসেবে আলাদা সুদ চাপানো যাবে না। গ্রাহক সময়মতো জরিমানা দিতে ব্যর্থ হলেও বাড়তি কোনও জরিমানা চাপাতে পারবে না ব্যাঙ্ক। অন্য এক প্রশ্নের উত্তরে জানানো হয়েছে, একই শ্রেণির ঋণ প্রকল্পেও জরিমানার অঙ্ক আলাদা হতে পারে যদি ঋণের পরিমাণ পৃথক হয়। তবে সে ব্যাপারও ঋণদাতাকে পর্ষদে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে জরিমানার হার ও কাঠামো চূড়ান্ত করতে হবে।