প্রতীকী ছবি
মূল্যবৃদ্ধির হারে লাগাম পরানোর বার্তা দিয়ে সুদ অপরিবর্তিত রাখলেও, আগামী দিনে ফের তা কমানোর পথ খুলে রাখার ইঙ্গিত দিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর পথে বাড়তে থাকা সংক্রমণ কিছুটা জল ঢেলেছে বলে আক্ষেপ করলেন গভর্নর শক্তিকান্ত দাস। চলতি অর্থবর্ষে সঙ্কোচনের পূর্বাভাস দেওয়ার সঙ্গে এল তাঁর আশ্বাস, মূল্যবৃদ্ধিতে কড়া নজর রাখা হচ্ছে। তা নিয়ন্ত্রণে আছে বুঝলেই অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে ফের সুদ কমানোর মতো অস্ত্রগুলি বের হবে। তবে বৃহস্পতিবারের ঋণনীতি ঘোষণায় চমক, করোনা মোকাবিলার পথ করে দিতে শীর্ষ ব্যাঙ্কের একগুচ্ছ পদক্ষেপ। যেখানে ঋণ পুনর্গঠনের সুযোগ শুধু বড় এবং ক্ষুদ্র-ছোট-মাঝারি সংস্থাকেই দেওয়া হল না, সেই তালিকায় রাখা হল সাধারণ মানুষের বাড়ি-গাড়ি সমেত ব্যক্তিগত ঋণকেও। মধ্যবিত্তকে আর্থিক সুরাহা দিতে যেমন স্বর্ণঋণ বেশি পাওয়ার দরজা খোলা হল, তেমনই ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারের তালিকায় ছোট-মাঝারি চাষি, পিছিয়ে থাকা মানুষের পুঁজি পাওয়ার পরিসর বাড়ানো হল।
সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণনীতি কমিটি দেউলিয়া আইনকে পাশে সরিয়ে রেখেই ফের ঋণ পুনর্গঠনের অনুমতি দিল ব্যাঙ্কগুলিকে। বহু সংস্থার ঋণ শোধে সমস্যা হবে আঁচ করেই যে পদক্ষেপের জন্য শীর্ষ ব্যাঙ্ককে চাপ দিচ্ছিল মোদী সরকার। তবে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বলেছে, এই সুযোগ মিলবে ঋণ শোধের ইতিহাস ভাল হলে। ২০২০ সালের ১ মার্চের আগে পর্যন্ত টাকা মেটাতে ৩০ দিনের বেশি দেরি না-করে থাকলে।
স্টেট ব্যাঙ্কের বেঙ্গল সার্কেলের কর্তা রঞ্জন কুমার মিশ্র বলেন, “ঋণ অনুৎপাদক সম্পদে পরিণত হওয়ার থেকে তা পুনর্গঠন করে টাকা শোধের সুযোগ দেওয়া ভাল। এটা ব্যাঙ্ক ও সংশ্লিষ্ট সংস্থা বা ব্যক্তি, দু’পক্ষেরই স্বার্থ রক্ষা করবে।’’ করোনা যখন সকলের রুজি-রোজগারে আঘাত হেনেছে, তখন এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে শিল্প।
তবে ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউট্যান্টসের পূর্বাঞ্চলের প্রাক্তন চেয়ারম্যান অনির্বান দত্তের দাবি, ‘‘ঋণের কিস্তি স্থগিতের ফলে ব্যাঙ্ক আর্থিক চাপে। ফলে ঋণ ঢেলে সাজার অপব্যবহার যাতে না হয়, তাতে ব্যাঙ্কগুলির কড়া নজর থাকা জরুরি।’’