ছবি: পিটিআই।
দেশের সকলের ভালর জন্যই আর্থিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা প্রয়োজন বলে মনে করে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। আর সেই স্থিতিশীলতা যাতে বজায় থাকে, তা নিশ্চিত করেই অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে শীর্ষ ব্যাঙ্ক সব রকম সাহায্য করতে প্রস্তুত বলে জানালেন গভর্নর শক্তিকান্ত দাস। সে জন্য আগামী দিনে দেশে ব্যাঙ্কগুলির অনুৎপাদক সম্পদের সমস্যা মোকাবিলা করতে ব্যাড ব্যাঙ্ক তৈরির প্রস্তাব এলে তা বিবেচনা করতে তাঁরা রাজি বলে জানান তিনি।
সপ্তাহের শুরুতেই নিজেদের আর্থিক স্থিতিশীলতা রিপোর্টে বাস্তব অর্থনীতির সঙ্গে সংযোগ না-থাকা শেয়ার বাজার, করোনার মোকাবিলায় কেন্দ্রের মাত্রাছাড়া ঋণ এবং ব্যাঙ্কিং শিল্পে চড়া অনুৎপাদক সম্পদ নিয়ে সতর্ক করেছিল রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। শনিবার এক ওয়েবিনারে শক্তিকান্ত বলেন, আর্থিক স্থিতিশীলতা শুধুমাত্র আর্থিক ক্ষেত্র বা মূল্যবৃদ্ধির ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য নয়। বরং রাজকোষের অবস্থা ও বাইরে থেকে আসা আঘাত যুঝতে পারার ক্ষমতাও এর সঙ্গে যুক্ত। ফলে সব পক্ষকেই বিষয়টিতে নজর দিতে হবে। সেই মতো তৈরি করতে হবে নীতিও।
আর এই প্রসঙ্গেই ব্যাঙ্কগুলিকে বাড়তি পুঁজি সংগ্রহের পরামর্শ দিয়েছেন দাস। গভর্নরের কথায়, ইতিমধ্যেই বেশ কিছু রাষ্ট্রায়ত্ত এবং বেসরকারি ব্যাঙ্ক মূলধন জোগাড়ের পথে হেঁটেছে। কিন্তু আগামী দিনে আর্থিক ক্ষেত্র যাতে অস্থির না-হয়, সে জন্য দ্রুত পুঁজি বাড়ানো, ঝুঁকি চিহ্নিত করা এবং স্বচ্ছতা পরিচালনায় আরও বেশি করে জোর দিতে হবে। সেই সঙ্গে ইতিমধ্যেই সমস্ত ব্যাঙ্ক এবং ব্যাঙ্ক নয় এমন আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে হিসেবের খাতায় করোনার প্রভাব খতিয়ে দেখার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, রিপোর্টে করোনার জেরে তৈরি হওয়া পরিস্থিতিতে সেপ্টেম্বরে ব্যাঙ্কগুলির ঋণের সাপেক্ষে মোট অনুৎপাদক সম্পদ ১৩.৫% হতে পারে বলে সতর্ক করেছে আরবিআই। যা ২২ বছরে সর্বাধিক। অবস্থা আরও খারাপ হলে তা ১৪.৮% হতে পারে।
আজ করোনার আবহে বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে নীতি পাল্টানোও জরুরি বলে জানিয়েছেন গভর্নর। সেই প্রসঙ্গেই ব্যাঙ্কের অনুৎপাদক সম্পদ বেচতে ব্যাড ব্যাঙ্ক তৈরিতে আপত্তি নেই বলে দাবি গভর্নরের। তাঁর কথায়, যে সময় যে নীতি দরকার, স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সেই সময়ে সেই ব্যবস্থা নিতে তাঁরা তৈরি। ব্যাড ব্যাঙ্কের প্রস্তাব এলে তা খতিয়ে দেখা হবে।
পাশাপাশি, বিভিন্ন দেশেই অতিমারি যে আর্থিক এবং সামাজিক বিভাজন যে আরও স্পষ্ট করে তুলেছে, তা মেনেছেন দাস। তিনি বলেন, অর্থনীতির উপরে করোনার প্রভাব যতটা সম্ভব কমিয়ে আনাই শীর্ষ ব্যাঙ্কের সামনে সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। সেই কাজে সেই কাজে তাঁরা কিছুটা হলেও সফল। আর সে জন্য বিভিন্ন নিয়ন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলায় জোর দেন তিনি। এ প্রসঙ্গে শক্তিকান্ত বলেন, একটি নিয়ন্ত্রকের আওতায় সব কিছু থাকলে নজরদারির ফাঁক থেকে যায়। বরং জরুরি হল সকলের মধ্যে যোগাযোগ রাখা।