—ফাইল চিত্র।
আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার (আইএমএফ) বা দেশের নিজস্ব সংস্থা ন্যাশনাল স্যাম্পেল সার্ভে অফিসের (এনএসএসও) রিপোর্ট উল্টো কথা বললেও সেগুলিকে পাশে সরিয়ে রেখে দেশের অর্থনীতির হাল যে ভাল, তা প্রমাণ করতে এ বার সিনেমার টিকিট বিক্রিকে হাতিয়ার করলেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। মহারাষ্ট্রে নির্বাচনী প্রচারে প্রসাদ বলেন, ২ অক্টোবর মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে ছুটির দিনে বলিউডের মাত্র তিনটি সিনেমার টিকিট বিক্রি হয়েছে ১২০ কোটি টাকার। তাঁর দাবি, ‘‘দেশের আর্থিক হাল ভাল না হলে এক দিনে ১২০ কোটি টাকার টিকিট বিক্রি হওয়া সম্ভব নয়।’’
এনএসএসও এবং আইএমএফের রিপোর্টকে ভুল অথবা অসম্পূর্ণ বলে ব্যাখ্যা করে সাংবাদিকদের প্রসাদ বলেন, ‘‘আমাকে বলা হয়েছে, শুধু ২ অক্টোবর এক দিনেই তিনটি হিন্দি ছবি দেখার জন্য টিকিট বিক্রি হয়েছে ১২০ কোটি টাকার। দেশের আর্থিক অবস্থা মজবুত না হলে মাত্র এক দিনেই তিনটি ছবির টিকিট বিক্রি থেকে এত টাকা আয় করা সম্ভব হত না।’’
টিকিট বিক্রি থেকে আয়ের নিরিখে দেশের আর্থিক হাল ভাল বলে প্রসাদ দাবি করলেও অতি সম্প্রতি প্রকাশিত তথ্য থেকে জানা গিয়ছে যে, গত অগস্ট মাসে দেশের শিল্পোৎপাদনের হার সরাসরি ১.১ শতাংশ কমে গত সাত বছরের মধ্যে সব থেকে নীচে নেমে এসেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, যা দেশে চাহিদার অভাবকেই বিশেষ ভাবে চিহ্নিত করেছে। কারণ, দেশে উৎপাদিত পণ্যের চাহিদা থাকলে শিল্পেও উৎপাদন বাড়ার কথা। কিন্তু সেটা না হওয়ার কারণেই শিল্পপতিরা উৎপাদনে রাশ টেনেছেন। যার ফলে তলানিতে এসে ঠেকেছে শিল্পোৎপাদনের হার।
পাশাপাশি এনএসএসওর রিপোর্ট জানিয়েছে যে, দেশে বেকারত্বের হার গত ৪৫ বছরের মধ্যে সব থেকে বেশি। বিশেষজ্ঞদের মতে, চাহিদা কমার অন্যতম কারণ বেকারত্বের হার বৃদ্ধি। কারণ, চাকরি পেলে তবেই মানুষ কেনাকাটিতে টাকা খরচ করতে পারেন। বেকারত্ব বাড়ার ফলে টান পড়েছে কেনাকাটিতে।
এ ছাড়া কিছু দিন আগেই আইএমএফ জানিয়েছে, চলতি বছরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আর্থিক অগ্রগতি কমেছে ঠিকই। কিন্তু বিশেষ ভাবে পিছিয়ে পড়েছে ভারত এবং ব্রাজিল।
ওই সব তথ্য সামনে থাকা সত্ত্বেও প্রসাদের অভিযোগ, ‘‘কিছু লোক সরকারের বিরোধিতা করার জন্যই বেকারত্বের হার নিয়ে মানুষকে ভুল বোঝাতে চাইছে। আইএমএফের সমীক্ষাও অসম্পূর্ণ।’’