প্রতীকী ছবি।
পেন্ডুলামের মতো দুলছে বাজার। কখনও বেশ খানিকটা উপরে লাফাচ্ছে। কখনও বা বিপজ্জনক ভাবে গড়িয়ে নীচে নেমে যাচ্ছে অনেকখানি। যেমন, লাগাতার পাঁচ দিন ধরে প্রায় ৩০০০ পয়েন্ট পতনের পড়ে দু’দিনে মোট ১৪৪৮.৫৩ উঠেছিল সেনসেক্স, শুধু বৃহস্পতিবারই প্রায় ৮৭৪ পয়েন্ট। শুক্রবার ফের নেমে গেল ৭১৫। দিন শেষ করল ৫৭,১৯৭.১৫ অঙ্কে। নিফ্টি-ও এ দিন ২২০.৬৫ পড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭,১৭১.৯৫-এ।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, মূল্যবৃদ্ধির চড়া হারে লাগাম পরাতে আমেরিকায় দ্রুত সুদ বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছে সে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক ফেডারাল রিজ়ার্ভ। তার পরেই পড়তে শুরু করে গোটা বিশ্বের প্রায় সমস্ত শেয়ার বাজার। তার ছাপ পড়ে ভারতেও। তার উপরে নাগাড়ে শেয়ার বিক্রি করে চলেছে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি। আমেরিকায় সুদ বাড়লে সেই গতি আরও বৃদ্ধির আশঙ্কা।
বাজার মহলের মতে, এমন অবস্থায় মূল্যবৃদ্ধি সামলাতে দেশেও রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক সুদ বাড়ালে আরও ভুগবে শিল্প। কারণ তাদের খরচ বাড়বে। তখন লগ্নি কমাতে বাধ্য হবে অনেকে। গাড়ি-বাড়ি ঋণের সুদ বাড়ার কারণেও চাহিদা কমবে। মূল্যবৃদ্ধি সামলাতে গিয়ে আর্থিক বৃদ্ধির গতি শ্লথ হবে।
বিশেষজ্ঞ অজিত দে-র মতে, “সারা বিশ্বে এখন আর্থিক সমস্যার চরিত্রটা মোটামুটি এক। জ্বালানি-সহ বিভিন্ন জিনিসের দামে নাজেহাল অবস্থা। চাহিদা কমার ফলে আর্থিক বৃদ্ধি শ্লথ হওয়ার আশঙ্কা। শেয়ার বাজারেও সেই উদ্বেগের প্রতিফলন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত অস্থিরতা এবং অনিশ্চয়তা কাটার আশা নেই। মাঝে-মধ্যে উত্থান দেখা গেলেও, যুদ্ধ যত দীর্ঘায়িত হবে সমস্যা তত বাড়বে।’’
তবে ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাক্তন সভাপতি কমল পারেখ বলেন, “অর্থনীতিতে সমস্যা থাকলেও, শেয়ার বাজারে নগদের অভাব নেই। সৌজন্যে মিউচুয়াল ফান্ডের লগ্নি। তাই বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি ভারতের বাজারে শেয়ার বেচে বেরিয়ে গেলেও, দেশীয় সংস্থাগুলির লগ্নি অনেক সময় বাঁচিয়ে দিচ্ছে।’’
যদিও এই লগ্নি বহু শেয়ারের দামকে কৃত্রিম ভাবে বাড়িয়ে দিয়েছে বলেও মনে করেন কমলবাবু। তাঁর বক্তব্য, বাস্তবে চড়া মূল্যবৃদ্ধির বিরূপ প্রভাব পড়ছে শিল্প সংস্থাগুলির মুনাফায়। এটা অর্থনীতির জন্য ঝুঁকির ব্যাপার।