দেশের আমজনতা ন্যায্যমূল্যে ওষুধ পাবেন, এই ছিল মনের ইচ্ছা। যে বয়স স্বপ্ন দেখার সময়, সেই ১৬ বছর বয়সেই এই কথা ভেবেছিলেন অর্জুন দেশপাণ্ডে। স্বপ্ন সফল ১৮-তেই। তাঁর স্বপ্নকে চিরস্থায়ী করতে এগিয়ে এলেন স্বয়ং রতন টাটা।
অর্জুনের উদ্যোগের পোশাকি নাম ‘জেনেরিক আধার’। তাঁর এই রিটেল চেইনে বৃহস্পতিবার লগ্নি করলেন রতন টাটা। তিনি ওই সংস্থার ৫০ শতাংশ শেয়ার কিনেছেন বলে জানা গিয়েছে।
জেনেরিক আধার ‘বিটুবিটুসি’ মডেল অনুসরণ করে। এই মডেলের পুরো নাম হল বিজনেস টু বিজনেস টু কনজিউমার্স। অর্থাৎ এখানে কোনও ব্যবসায়ী সরাসরি ক্রেতা বা উপভোক্তাদের সঙ্গে লেনদেন না করে আরও একটি ব্যবসায়ীর মাধ্যমে করেন। অর্জুনের সংস্থা সরাসরি ক্রেতাদের কাছে না গিয়ে রিটেলার বা খুচরো বিক্রেতাদের মাধ্যমে পরিষেবা পৌঁছে দেন।
এই মডেলের ফলে দালাল বা ফড়েদের ঝামেলা থেকে মুক্ত এই উদ্যোগ। মূলত ই পোর্টালে এই ধরন অনুসরণ করা হয়। তবে অর্জুন এই মডেল অনুসরণ করে ওষুধের বড় ব্যবসায়ী এবং অনলাইন পরিষেবার বিরুদ্ধে যুদ্ধে টিকে থাকতে খুচরো বিক্রেতাদের হাতে হাতিয়ার তুলে দিচ্ছেন ।
মধ্যসত্ত্বভোগীরা না থাকায় খুব সহজেই ওষুধ পৌঁছে যায় সাধারণ মানুষের হাতে।
শুধু তাই নয়। দাম-ও কম থাকে। ওষুধের মতো অত্যাবশ্যকীয় পণ্য সুলভ মূল্যে দেশবাসীর কাছে পৌঁছতে পারছে এই উদ্যোগের ফলে।
আপাতত শুধু মধুমেহ ও উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ নিয়ে কাজ করছে অর্জুনের সংস্থা।
তবে খুব তাড়াতাড়ি ‘জেনেরিক আধার’ ক্যানসারের ওষুধ নিয়েও কাজ করবে। সে ক্ষেত্রে চলতি বাজারদরের থেকে অনেক দামে রোগীদের কাছে ওষুধ পৌঁছে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তবে অর্জুনের ‘জেনেরিক আধার‘ প্রথম নয়। তার আগেও রতন টাটা দেশের নবীন স্টার্ট আপ-এর পাশে দাঁড়িয়েছেন। ওলা, উবর, পেটিএম, আর্বান ল্যাডার-এর মতো বাণিজ্যিক সংস্থায় লগ্নি করেছেন রতন টাটা।
আঠেরোর স্বপ্নকে স্থায়িত্ব দিতে দ্বিধাহীন অশীতিপর চিরতরুণ। তবে এই অর্জুনের এই উদ্যোগের পিছনে অনুঘটক তাঁর মা।
আঠারোর স্বপ্নকে স্থায়িত্ব দিতে দ্বিধাহীন অশীতিপর চিরতরুণ। তবে এই অর্জুনের এই উদ্যোগের পিছনে অনুঘটক তাঁর মা।
অর্জুনের মা আন্তর্জাতিক ওষুধের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। মায়ের সঙ্গে ছোটবেলায় বহু বার বিদেশ সফর করেছে অর্জুন। জরুরি কাজ হলেও, ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে যেতে হত তাঁর মাকে।
অর্জুন ছোট থেকেই অবাক হয়ে দেখছেন, বিদেশের তুলনায় তাঁর নিজের দেশে ওষুধের দাম বেশি। কারণ হিসেবে মায়ের কাছে শুনলেন, ওষুধ ব্র্যান্ডেড হয়ে যাওয়ার ফলেই বহুমূল্য হয়ে পড়ে।
একই কম্পোজিশনের ওষুধের দাম ব্র্যান্ডভেদে পরিবর্তিত না হয়, সেই বিষয়ে ভাবনাচিন্তা সেই ১৬ বছর বয়স থেকেই করেন অর্জুন। তাঁর সেই উদ্যোগের বাস্তব রূপ হল ‘জেনেরিক আধার’। তাঁর সংস্থার বার্ষিক ব্যবসা ৬ কোটি টাকার বলে জানিয়েছেন অর্জুন।