প্রতীকী ছবি।
কাজের বাজারের অবস্থা কতটা শোচনীয় তা পরিষ্কার হয়েছিল চার বছর আগে। জাতীয় পরিসংখ্যান দফতরের (এনএসও) রিপোর্টে। জানা গিয়েছিল, ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে দেশে বেকারত্বের হার ছিল ৬.১%। যা কিনা সাড়ে চার দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। এ বার পরিসংখ্যান ও কর্মসূচি রূপায়ণ মন্ত্রকের সাম্প্রতিকতম রিপোর্টে দাবি করা হল, তার পর থেকে কাজের বাজারের অবস্থার উন্নতি হয়েছে। ২০২০-২১ সালে (২০২০-র জুলাই থেকে ২০২১-এর জুন) তা কমে হয়েছে ৪.২%।
সরকারি পরিসংখ্যানের এই দাবি ঘিরে কিছুটা বিস্ময় ছড়িয়েছে। অনেকের প্রশ্ন, অতিমারির প্রথম ঢেউয়ের আবহে সিএমআইই-সহ বিভিন্ন উপদেষ্টা সংস্থার রিপোর্টে যখন কাজের বাজারের দুর্দশার অবস্থা স্পষ্ট হয়েছে, তখন কেন্দ্রের রিপোর্টে তার উল্টো ছবি কী ভাবে? বিশেষ করে লকডাউনের সময়ে যখন সারা দেশের অসংগঠিত ক্ষেত্রেই কার্যত তালা পড়ে গিয়েছিল এবং কর্মস্থল ছেড়ে গ্রামে ফিরতে দেখা গিয়েছিল লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিককে! বিশেষজ্ঞদের অন্য একটি অংশের আবার বক্তব্য, করোনার প্রকোপের তুলনায় কাজের পরিস্থিতির উন্নতি হলেও তার মান ও মজুরি আগের জায়গায় পৌঁছয়নি।
পরিসংখ্যান মন্ত্রক অবশ্য বুধবার জানিয়েছে, করোনার জেরে তাদের সমীক্ষা মধ্যবর্তী সময়ে বিঘ্নিত হয়েছিল। ২০২০ সালের ১৮ মার্চ থেকে নমুনা সংগ্রহের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। তা ফের চালু হয় জুনে। আবার গত বছরের এপ্রিলে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ফের কাজ বন্ধ করে দিতে হয়। তা ঠিক ভাবে চালু হয় জুনে। সে কারণে ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ২০২১ সালের মার্চের বদলে রিপোর্ট তৈরি হয়েছে জুলাই থেকে জুন পর্যন্ত। গ্রাম ও শহর মিলিয়ে ১,০০,৩৪৪ পরিবারের ৪,১০,৮১৮ জন মানুষের মধ্যে সমীক্ষা চালানো হয়েছে।
রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে বেকারত্বের হার ছিল ৫.৮%। ২০১৯-২০ সালে তা আরও কমে দাঁড়ায় ৪.৮%। এর পর আলোচ্চ সময়ে ৪.২%। কাজের বাজারে যোগ দিয়ে চাওয়া পুরুষ প্রার্থীদের বেকারত্বের হার ৫.১% থেকে কমে ৪.৫% হয়েছে। মহিলাদের ক্ষেত্রে তা ৪.২% থেকে কমে হয়েছে ৩.৫%। জনসংখ্যার নিরিখে কাজ পাওয়া মানুষের অনুপাতেরও উন্নতি হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে রিপোর্টে।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।