—প্রতীকী চিত্র।
তেল রফতানিকারী দেশগুলির গোষ্ঠীর (ওপেক) মধ্যে বৃহত্তম সৌদি আরব আগামী মাস থেকে অশোধিত তেলের উৎপাদন দৈনিক ১০ লক্ষ ব্যারেল ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে সাময়িক উঠেছিল তেলের দর। কিন্তু চিনের আর্থিক বৃদ্ধি কমার আশঙ্কা, বিশ্ব জুড়ে এখনও মূল্যবৃদ্ধির ভ্রুকুটি বজায় থাকা ও তার জেরে ফের সুদ বৃদ্ধি নিয়ে চর্চা চলছে। এর জেরে চাহিদা ধাক্কা খাওয়ার আশঙ্কায় ফের নিম্নমুখী অশোধিত তেলের দর। বেশ কিছু দিন ধরে এই পরিস্থিতি চললেও ভারতে জ্বালানির দামের ছেঁকা থেকে এখনও রেহাই মেলেনি। সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে, বিশ্ব বাজারে তেলের দাম কম থাকলে দেশেও তা কমানোর দাবি আরও পোক্ত হবে।
গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার অশোধিত তেলের দর পড়েছে। শুক্রবার ব্রেন্ট ক্রুডের দাম কমে ব্যারেল প্রতি ৭৩.৮৫ ডলার হয়। আর এক অশোধিত তেল ডব্লিউটিআই নামে ৬৯.১৬ ডলারে। তার আগে মূল্যবৃদ্ধিকে বাগে আনার লড়াইয়ে ব্যাঙ্ক অব ইংল্যান্ড এবং নরওয়ে ও সুইৎজ়ারল্যান্ডের শীর্ষ ব্যাঙ্কগুলি সুদের হার বাড়ানোয় বৃহস্পতিবার ব্রেন্ট ক্রুডের দাম পড়ে ব্যারেল প্রতি প্রায় ৩ ডলার। আমেরিকার শীর্ষ ব্যাঙ্কও শীঘ্রই আরও এক বার সেই পথে হাঁটবে বলেই জল্পনা। সুদের হার বাড়লে ঋণ নেওয়ার খরচও বাড়ে। যা অর্থনীতির গতিকে হ্রাস করতে পারে। কমতে পারে তেলের চাহিদাও। সব মিলিয়ে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে তেলের দর ঘিরে অনিশ্চয়তা বাড়ছে।
আর তাতেই ফের প্রশ্ন উঠছে, ভারতে তার সুফল পেতে আর কত দিন অপেক্ষা করতে হবে নাগরিকদের? এ নিয়ে গত মাসের শেষে সরব হয়েছিল কংগ্রেস। তাদের দাবি, এক বছর আগে অশোধিত তেলের দর ছিল ব্যারেল প্রতি প্রায় ১২৪ ডলার। এ বছরে তা ৭২ ডলারের কাছে নেমেছিল। তেলের আমদানি খরচ কমলেও সাধারণ মানুষের দামে সুরাহা হয়নি।
প্রথমে সরকারি সূত্র এবং তার পরে খোদ ভারতের তেলমন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরীও দেশে তেলের দাম কমার ইঙ্গিত দেন। যদিও পুরীর বক্তব্য ছিল, অশোধিত তেল ৭৫ ডলারের মধ্যে থাকলে এবং তিন মাস পরিস্থিতি ভাল গেলে তেল সংস্থাগুলি দেশেও দর ছাঁটাইয়ের অবস্থায় থাকবে।
কিন্তু সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের প্রশ্ন, বিশ্ব বাজারে তেলের দামের গতিবিধি কমের দিকে থাকলেও কেন এত অপেক্ষা করতে হবে ভারতবাসীকে? বিশেষ করে যখন রাশিয়া থেকে সস্তায় বেশি তেল কেনার কথা মোদী সরকারই ফলাও করে জানাচ্ছে। তা হলে কেন সেই বছর শেষে কয়েকটি রাজ্যে ভোট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে?