প্রতীকী ছবি।
সংক্রমণ কমায় গয়নার দোকানে ভিড় করছেন ক্রেতারা। অনেকে বিয়ের কেনাকাটা সেরে রাখার পরিকল্পনা করছেন। ব্যবসার ছন্দে ফেরার আশায় কিছুটা স্বস্তিতে ব্যবসায়ীরা। কিন্তু ফের গোটাটাই মাটি হতে বসেছে। বৃহস্পতিবার মাত্র একদিনে কলকাতায় ১০ গ্রাম পাকা সোনার (২৪ ক্যারাট) দাম বেড়ে গিয়েছে ৯৫০ টাকা। এক মাসের সামান্য বেশি সময়ে চড়েছে ৩০০০ টাকারও বেশি। জিএসটি ধরে তা এ দিন ছুঁয়ে ফেলেছে ৫১,৪৪৮.৫০ টাকা। পাকা সোনা বাড়লে গয়নার সোনাও (২২ ক্যারাট) চড়ে। খুচরো বাজারে তার (১০ গ্রাম) দাম জিএসটি সমেত ৪৮,৮২২ টাকায় পৌঁছেছে।
ফলে কার্যতই মাথায় হাত বিয়ের গয়না কিনতে সোনার বাজারে পা রাখা ক্রেতার। উদ্বিগ্ন ব্যবসায়ীরাও। গত বছর সংক্রমণ আর চড়া দাম তাঁদের ব্যবসা কেড়েছিল। যে কারণে সম্প্রতি ধনতেরসের সময় গয়না কেনার হিড়িক দেখে স্বস্তি ফেরে কিছুটা। ঘুরে দাঁড়ানোর আশায় দিন গোনা শুরু হয় ছোট দোকানগুলিতেও। কিন্তু সেই স্বস্তি স্থায়ী হল না।
স্বর্ণশিল্প মহলের আশঙ্কা, সোনার দাম আরও বাড়তে পারে। কারণ, ভারতে দামের ওঠা-পড়া নির্ভর করে আন্তর্জাতিক বাজারের উপরে। যেখানে বিপজ্জনক হারে মাথা তুলছে মূল্যবৃদ্ধির দৈত্য। আমেরিকায় তার হার তিন দশকের মধ্যে সব থেকে চড়া। মুদি বাজার থেকে শুরু করে গাড়ি, বাড়ি, কোনও কিছুই রেহাই পায়নি। একই অবস্থা ইউরোপ বা বিশ্বের অন্যান্য প্রান্তেও। বিশেষজ্ঞদের দাবি, মূল্যবৃদ্ধির হার মাথা তুললে সোনার দাম বাড়াই দস্তুর। লগ্নিকারীদের অনেকে তখন ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চান সুরক্ষিত হলুদ ধাতুতে লগ্নি করে। ফলে তার চাহিদা বাড়ে। তাল মিলিয়ে বাড়ে দাম। পরিসংখ্যান বলছে, বিশ্ব বাজারে প্রতি আউন্স পাকা সোনা সম্প্রতি ৪০ ডলার বেড়ে হয়েছে ১৮৬২ ডলার। ফলে ভারত-সহ অনেক দেশেই সোনার দরে আগুন লেগেছে। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, আগামী বছর আন্তর্জাতিক দুনিয়ায় মূল্যবৃদ্ধির হার ২.৪% হতে পারে। যার ফলে আরও মাথা তুলতে পারে সোনার দাম।
স্বর্ণশিল্প বাঁচাও কমিটির কার্যকরী সভাপতি বাবলু দে বলেন, ‘‘আশঙ্কা যে এত তাড়াতাড়ি মিলে যাবে ভাবিনি। ধনতেরসে গয়নার বিক্রি ভাল হয়েছে। সামনে বড়দিন, নতুন বছর। শুরু হচ্ছে বিয়ের মরসুমও। দাম আরও বাড়ার আশঙ্কায় কেনাকাটা এখন কিছুটা বাড়বে হয়তো। কিন্তু ভবিষ্যতের বাজার নিয়ে আমরা চিন্তিত।’’
ফের সিঁদুরে মেঘ দেখছেন গয়না তৈরির কারিগরেরা। বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক টগর পোদ্দার বলেন, গত বছর ৫৬ হাজার ছাড়ানো রেকর্ড সোনা অনেকের কাজ কেড়েছিল। দাম কিছুটা কমায় তাই স্বস্তি ফিরেছিল। কিন্তু রোজগার হারানোর ভয় ফের তাড়া করছে।