—প্রতীকী চিত্র।
ছ’মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ হল সোনার দাম। ধনতেরসের পরে দু’সপ্তাহেই বাড়ল ২০০০ টাকা। সোমবার এই প্রথম কলকাতার বাজারে ১০ গ্রাম খুচরো পাকা সোনা ৬২,৭৫০ টাকায় পৌঁছে গড়ল নজির। জিএসটি ধরলে মুখ ৬৫ হাজারের দিকে (৬৪,৬৩২.৫০ টাকা)। সোনার বাট কর বাদে ৬২,৪৫০ টাকা, ধরলে ৬৪,৩২৩.৫০ টাকা।
দামের দৌড়ে চিন্তায় বহু মানুষ। বিশেষত যাঁদের বিয়ের কেনাকাটা করতে হবে এখনই। বিক্রেতাদের দাবি, এত দ্রুত এতটা দাম বৃদ্ধির আশঙ্কা করেননি কেউ। ফলে যাঁরা ধীরেসুস্থে বাছাই করে কিনছিলেন, তাঁদের একাংশ বিপাকে পড়েছেন। উদ্বেগ বাড়লেও স্বর্ণ শিল্পমহলের অবশ্য দাবি, ক্রেতারা আসছেন এখনও। বাজেট সামলাতে হালকা গয়নায় ঝুঁকছেন অনেকে। কমেছে শখের গয়না কেনা। জেম অ্যান্ড জুয়েলারি ডোমেস্টিক কাউন্সিলের ডিরেক্টর সমর দে জানান, “বিয়ের বিক্রি বাজারকে ধরে রেখেছে। এখন ভরা বিয়ের মরসুম। ক্রেতাদের আসতেই হচ্ছে।’’ তেমনই এক ক্রেতা বেলঘরিয়ার সুমন কুমার সাহা বলেন, ‘‘দিদির বিয়ের জন্য চড়া দামেই গয়না কিনছি। দাম প্রায় রোজই বাড়ছে। তাই আরও বাড়ার আগে কিনে রাখছি।’’
এই আশঙ্কা বাজারকে সচল রাখার অন্যতম কারণ, বলছেন বনগাঁর গয়না ব্যবসায়ী বিনয় সিংহ। তাঁর কথায়, ‘‘বিয়ে ও উপহারের ক্রেতারা ভিড় করছেন। তবে বেশির ভাগ কাটছাঁট করছেন খরচ।’’ এই সব কারণেই ছোট দোকানগুলিতেও ক্রেতা আসছেন, দাবি বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক টগর পোদ্দারের। তাঁর দাবি, সাধারণ মানুষ প্রয়োজন পড়লে গয়না কিনছেন। তাই কম ওজনের বিকোচ্ছে বেশি। অঞ্জলি জুয়েলার্সের ডিরেক্টর অনর্ঘ উত্তীয় চৌধুরী অবশ্য জানান, “ভবিষ্যতে মুনাফার আশায় অনেকে প্রয়োজন না থাকলেও লগ্নির জন্য গয়না কিনছেন।’’ সোনার দাম যে ভাবে বাড়ছে তাতে ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা। তাঁদের আশঙ্কা, “বিয়ের মরসুমে ব্যবসা খুব ভাল না হলেও খারাপ চলছে না। কিন্তু সামনেই পৌষ মাস। তখন হাল কী দাঁড়াবে, তা নিয়ে চিন্তায় আছি।’’
বিশেষজ্ঞদের দাবি, বিশ্ব বাজারে সোনার দাম লাফিয়ে বাড়ছে চাহিদা বাড়ায়। কারণ সুরক্ষার খোঁজে লগ্নি বাড়ছে তাতে। প্রতি আউন্স ২৪ ক্যারাট ২০১২.৮ ডলারে উঠেছে। তারই ঢেউ আছড়ে পড়ছে দেশে।