—প্রতীকী চিত্র।
সাধারণ মানুষের বিদ্যুৎ ব্যবহারের খরচ বৃদ্ধির প্রতিবাদে বুধবার রাজ্য বণ্টন সংস্থার সদর দফতর বিদ্যুৎ ভবন অভিযান করে বিক্ষোভ সমাবেশ করল গ্রাহক সংগঠন অ্যাবেকা। এর পাশাপাশি স্মার্ট মিটার ব্যবহারের নির্দেশ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে ১৯ দফা দাবি-সনদও পেশ করে তারা।
রাজ্য বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের অনুমোদনক্রমে সম্প্রতি রাজ্য বণ্টন সংস্থা গ্রাহকদের বিদ্যুৎ সংযোগের স্থায়ী (ফিক্সড) চার্জ মাসে প্রতি ‘কেভিএ’-র ভিত্তিতে (অর্থাৎ, লোড বা বিদ্যুৎ সংযোগের পরিমাণ) ১৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০ টাকা করেছে। বিদ্যুৎ ব্যবহার না হলে যে ন্যূনতম চার্জ নেওয়া হত, সেটিও মাসে একলপ্তে ৫০ টাকার বদলে বাড়িয়ে মাসে করেছে প্রতি ‘কেভিএ’-র ভিত্তিতে ৭৫ টাকা। সময়ে বিল না মেটালে গ্রাহকের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা এবং পরে তা শোধ করলে ফের সংযোগ চালু করার খরচ দীর্ঘ দিন বাদে বাড়ানো হয়েছে অনেকটা। এ সবেরই প্রতিবাদে এই অভিযান বলে জানায় অ্যাবেকা।
সাম্প্রতিক কালে বণ্টন সংস্থার বহু গ্রাহক অভিযোগ তুলেছেন, এ বছর গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ ব্যবহারের জন্য মাত্রাতিরিক্ত বিল পেয়েছেন তাঁরা। যার অঙ্ক যুক্তিহীন। যদিও বণ্টন সংস্থাটির দাবি, ওই চার্জগুলি ছাড়া বিদ্যুৎ ব্যবহারের মাসুল (এনার্জি চার্জ) দীর্ঘ দিন ধরে স্থির। গরমে বাড়তি বিদ্যুৎ খরচের জন্যই বেশি বিল এসেছে গ্রাহকের। যাঁদের ব্যবহার কম, তাঁদের ক্ষেত্রে তা ঘটেনি। বেশি গরমে বিল চড়ার বিষয়টি খানিকটা মানলেও অ্যাবেকার দাবি, স্থায়ী ও ন্যূনতম চার্জ বৃদ্ধি অযৌক্তিক। এর মূল প্রভাব পড়েছে ছোট গ্রাহকদের উপর, যাঁদের বিদ্যুতের ব্যবহার অনেক কম। তাঁদের খরচের বোঝা বেড়েছে। বিশেষ করে ক্ষুদ্র শিল্প, ছোট ব্যবসা, কৃষি ও নিম্নবিত্ত সাধারণ গ্রাহকের অনেকেই বিদ্যুৎ সংযোগ ছেড়ে দিতে চাইছেন। এর আগের নির্দেশে মাসুল কমানোর সিদ্ধান্তও বণ্টন সংস্থাটি কার্যকর করেনি বলে অভিযোগ করেছে অ্যাবেকা।
একই সঙ্গে এ দিন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের (আরডিএসএস) নিয়ম মেনে স্মার্ট মিটার চালুর তীব্র বিরোধিতা করে গ্রাহক সংগঠনটি। তাদের দাবি, বিদ্যুৎ ক্ষেত্র যেহেতু যৌথ তালিকাভুক্ত, তাই রাজ্য কেন্দ্রের ওই নির্দেশ না মানতেই পারত। এতে যেমন গ্রাহকেরা সমস্যায় পড়বেন, তেমনই মিটার ‘রিডার’দের কাজ নিয়েও সংশয় দেখা দেবে। অ্যাবেকা জানিয়েছে, ছোট গ্রাহকদের স্বার্থে ন্যূনতম চার্জ বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনা করার এবং পুজোর মুখে সংযোগ বিচ্ছিন্ন না করার বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। যদিও এই দিন বণ্টন সংস্থার তরফে এ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।