প্রতীকী ছবি।
কর্মীদের জন্য এমপ্লয়িজ স্টেট ইনশিওরেন্স (ইএসআই) প্রকল্প আর পুরোপুরি বাধ্যতামূলক না-রাখার প্রস্তাব দিয়েছেন ইএসআই নিগম কর্তৃপক্ষ। আগামী মাসেই এ নিয়ে নিগমের পর্ষদে কথা হবে। তবে এই প্রস্তাবে ক্ষুব্ধ কর্মীরা। এর বিরোধিতা করা হবে বলে জানিয়ে পর্ষদের কর্মী প্রতিনিধি এবং এআইইউটিইউসির সাধারণ সম্পাদক শঙ্কর সাহা বলেন, তাঁদের আশঙ্কা এ ভাবে সরকার চাইছে এই বিমার সুবিধা থেকে কর্মী-শ্রমিকদের বঞ্চিত করতে। এমনকি এ ভাবে আগামী দিনে প্রকল্পটিকে একেবারে তুলে দেওয়া হতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে। একাংশের প্রশ্ন, আসলে খরচ ছাঁটতেই কি এই পথ নিতে চাইছে শ্রম মন্ত্রকের আওতাভুক্ত ইএসআই নিগম?
এখন কোনও সংস্থায় যাঁদের বেতন মাসে ২১ হাজার টাকার মধ্যে, তাঁদের বাধ্যতামূলক ভাবে এর আওতায় আসতে হয়। পাওয়া যায় পাঁচটি সুবিধা। প্রস্তাবে প্রকল্পের প্রধান দু’টি সুবিধাকেই আর বাধ্যতামূলক না রাখার কথা বলা হয়েছে। এগুলি হল, কর্মী এবং তাঁর পরিবারের সমস্ত চিকিৎসা খরচ পাওয়া। আর নিজের চিকিৎসার জন্য কাজে যেতে না পারার দরুন কর্মীর বেতন কাটা গেলে, সেই বাবদ ক্ষতিপূরণের সুবিধা। সেই সঙ্গে এটাও বলা হয়েছে, ওই দুই সুবিধা না নিলে কর্মীকে কিছুই আর দিতে হবে না। নিয়োগকারীকে সামান্য কিছু দিতে হতে পারে। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, প্রস্তাব কার্যকর হলে কর্মীদের আর বাধ্যতামূলক ভাবে ইএসআইয়ের আওতায় থাকতে হবে না। অর্থাৎ চাইলে তাঁরা ওই প্রকল্প থেকে বেরিয়েও আসতে পারবেন।
এ দিকে, গত জুলাই থেকেই ইএসআই খাতে নিয়োগকারী এবং কর্মীর দেয় টাকার পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। আগে বেতনের ৪.৭৫% নিয়োগকারীকে ইএসআই খাতে দিতে হত প্রতি মাসে। এখন তা কমে হয়েছে ৩.২৫%। পাশাপাশি কর্মীদের দিতে হত বেতনের ১.৭৫% টাকা। কমিয়ে করা হয়েছে ০.৭৫%।
এখন সুবিধা
• কর্মী ও তাঁর পরিবারের চিকিৎসার পুরো খরচ।
• চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে থাকার দরুন বেতন কাটা গেলে সেই বাবদ ক্ষতিপূরণ। যা
প্রায় সংশ্লিষ্ট কর্মীর
বেতনের ৬০%।
• দুর্ঘটনার কারণে যদি কর্মী কাজের ক্ষমতা হারান, ঘরে বসে পাবেন বেতনের ৮০% পর্যন্ত টাকা।
• কাজের জায়গায় দুর্ঘটনায় কর্মীর মৃত্যু হলে তাঁর পরিবার পাবে পেনশন।
• মহিলাদের ক্ষেত্রে দু’টি সন্তান পর্যন্ত প্রসবের খরচ পাওয়া যায়। মেলে ৬ মাস করে ছুটির পুরো বেতনও।
এ দিন শঙ্করবাবুর দাবি, ‘‘কেন্দ্রের আইন অনুসারেই ইএসআইয়ের সুবিধা পেয়ে থাকেন কর্মীরা। ওই প্রস্তাব কার্যকর হলে আদতে ক্ষতি হবে তাঁদের। আর সুবিধা পাবেন নিয়োগকারীরা।’’ কর্মী সংগঠনের আশঙ্কা, ওই প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে আগামী দিনে নিয়োগকারীরা ইএসআই খাতে দেয় খরচ বাঁচানোর জন্য কোনও না কোনও ভাবে কর্মীদের বাধ্য করবেন ওই প্রকল্প থেকে বের করে নিয়ে আসতে। বিশেষ করে নতুন চাকরি পাচ্ছেন যাঁরা, তাঁদের।