সস্তা হয়েছে আনাজপাতি। কিন্তু সেই নিশ্চিন্তি স্থায়ী হল না। প্রতীকী ছবি।
দেশের মানুষকে কিছুটা স্বস্তি দিয়ে নভেম্বরে ১১ মাসে প্রথম বার রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের বেঁধে দেওয়া ৬% সহনসীমার নীচে নেমেছে খুচরো মূল্যবৃদ্ধি। সব থেকে বড় কথা, কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান অনুযায়ী খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির গতি কমেছে। সস্তা হয়েছে আনাজপাতি। কিন্তু সেই নিশ্চিন্তি স্থায়ী হল না। বরং বেকারত্ব বৃদ্ধির চিন্তা আরও বাড়িয়ে কেন্দ্রের আর এক রিপোর্ট জানাল, অক্টোবরে দেশের শিল্পোৎপাদন কমেছে একলপ্তে ৪%। ২৬ মাসে সব থেকে কম। এর জন্য দায়ী মূলত কল-কারখানার মতো উৎপাদনমুখী ক্ষেত্রের কর্মকাণ্ডে ধাক্কা। বিদ্যুৎ এবং খননে বৃদ্ধির হার ঝিমিয়ে।
সোমবার সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, গত মাসে মূলত খাদ্যপণ্যের দাম কমার ফলেই খুচরো মূল্যবৃদ্ধি নেমেছে ৫.৮৮ শতাংশে। অক্টোবরে তা ছিল ৬.৭৭%। আর গত বছর নভেম্বরে ৪.৯১%। মূল্যবৃদ্ধিকে নিয়ন্ত্রণ করতে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক গত মে থেকে পাঁচ দফায় ২২৫ বেসিস পয়েন্ট সুদ বাড়িয়েছে। এ দিন টুইটে অর্থ মন্ত্রকের দাবি, সরকার খাদ্যের দাম কমানোর পদক্ষেপ করার ফলেই মূল্যবৃদ্ধি সহনযোগ্য সীমার মধ্যে ঢুকেছে। কমবে ভোজ্যতেল, ডাল আর চাল-গমের দামও।
তবে মূল্যবৃদ্ধি কমার স্বস্তিতে কিছু পরেই জল ঢালে শিল্পোৎপাদন ৪% কমার হিসাব। উৎপাদনমুখী ক্ষেত্র, সেখানে ব্যবহৃত মূলধনী পণ্য, এমনকি ভোগ্যপণ্য উৎপাদনও সঙ্কুচিত। প্রশ্ন উঠেছে, আর্থিক কর্মকাণ্ড ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে বলা হচ্ছে বার বার। খোদ মোদী সরকার সেই বার্তা দিচ্ছে। তা হলে উৎপাদনের এমন হাল কেন?
ইক্রার মুখ্য অর্থনীতিবিদ অদিতি নায়ারের দাবি, মূল্যবৃদ্ধির ৬ শতাংশের নীচে নামা যেমন অপ্রত্যাশিত, তেমনই শিল্পোৎপাদনের এতখানি সঙ্কোচন।
তবে ব্যাঙ্ক অব বরোদার মুখ্য অর্থনীতিবিদ মদন সবনিবাসের দাবি, পোশাক জুতো, জ্বালানি, আলোর মূল্যবৃদ্ধি এখনও ৬ শতাংশের উপরে।স্বাস্থ্য, বিনোদন, শিক্ষা বা ব্যক্তিগত যত্নের ক্ষেত্রে গৃহস্থের ব্যবহার্য বহু পণ্যের দাম চড়া। তাঁর আশঙ্কা, খুচরো মূল্যবৃদ্ধি ডিসেম্বরে ফের ৬.৫% হতেপারে। ফলে আরবিআই এখনই সুদ বৃদ্ধির পথ থেকে সরবে না। এ মাসের মূল্যবৃদ্ধি যে শীর্ষ ব্যাঙ্কের পরবর্তীঋণনীতি বৈঠকের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ, তা বলছেন অদিতিও। বিশেষত সম্প্রতি আরবিআই গভর্নর যেখানে বলেছেন, দেশ চড়া মূল্যবৃদ্ধির জমানাকে পিছনে ফেললেও, যুদ্ধ শেষ হয়নি।