—প্রতীকী চিত্র।
গত বছর অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত লাগাতার নজিরবিহীন দামি হতে দেখা গিয়েছিল সোনাকে। এ বছর মার্চে ফের বেলাগাম দর। প্রায় রোজ নতুন নতুন শিখরে পা রেখে তা ঘুম কাড়ছে গয়নার ক্রেতাদের। বুধবার কলকাতার বাজারে ১০ গ্রাম খুচরো পাকা সোনা (২৪ ক্যারাট) এই প্রথম পৌঁছে গিয়েছে ৬৫,৪০০ টাকায়। জিএসটি নিয়ে ৬৭ হাজারের উপরে। ফলে দাম বিপুল বেড়েছে গয়নারও। পিসি চন্দ্র, সেনকোর মতো বড় বিক্রেতাদের দাবি, তাদের দোকানে ইতিমধ্যেই বেশ খানিকটা কমে গিয়েছে ক্রেতার আনাগোনা। যাঁদের না-কিনে উপায় নেই, তাঁরা আসছেন। সে ক্ষেত্রেও চাহিদা মূলত দামে ছাড় পাওয়ার প্রকল্পগুলির। আর ছোট গয়নার ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ বাড়ছে দোকান দিনভর প্রায় ফাঁকা পড়ে থাকায়।
পিসি চন্দ্র গোষ্ঠীর এমডি উদয় চন্দ্রের বক্তব্য, ‘‘এমনিতেই মার্চ অর্থবর্ষের শেষ মাস হওয়ায় বিক্রি কমে। আসন্ন চৈত্রে বিয়ের মরসুম না থাকাও এর কারণ। তার উপরে এ বার দাম চড়া। বিক্রি এখনই ২০% কমেছে। বহু ক্রেতা দাম কমার আশায় আপাতত কেনাকাটা করছেন না।’’ সেনকো গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডসের বিক্রি প্রায় ৩০% কমে গিয়েছে, বলছেন কর্ণধার শুভঙ্কর সেন। সংস্থাটি এখন ২২ ক্যারাটেরও কমে তৈরি গয়নার বিপণনে জোর দিচ্ছে।
বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পী কমিটির সাধারণ সম্পাদক টগর পোদ্দারের দাবি, ছোট দোকানগুলিতে বিক্রি প্রায় উধাও। নববর্ষের জন্য এই সময় অর্ডার বুক হওয়ার চল থাকলেও, এ বার এখনও তা প্রায় শূন্য। চিন্তা বাড়ছে গয়নার কারিগরদের। বিক্রি কমলে তাঁদের বরাতও কমে। এই অবস্থা কত দিন চলবে, সেটাই প্রশ্ন সব মহলের।
অঞ্জলি জুয়েলার্সের ডিরেক্টর অনর্ঘ উত্তীয় চৌধুরীর অবশ্য অভিমত, ‘‘সোনার দাম বহু বছর ধরেই ঊর্ধ্বমুখী। তবু মানুষ তা কেনেন। কারণ, এখানে লগ্নি করে যে রিটার্ন পাওয়া যায়, তা আর কোনওখান থেকে মেলে না। তাই দাম বাড়ার ফলে সোনায় আগ্রহও বেড়ে গিয়েছে।’’