—প্রতীকী চিত্র।
লাফিয়ে বাড়ছে দাম। চার দিনেই ১০ গ্রাম খুচরো পাকা সোনা (২৪ ক্যারাট) চড়েছে ২০০০ টাকা। ফলে এই প্রথম তা পেরিয়েছে ৬৫,০০০ টাকার মাইলফলক। মঙ্গলবার কলকাতায় নজিরবিহীন ভাবে দাম ছুঁয়েছে ৬৫,২৫০ টাকা। এতে ইতিমধ্যেই সোনায় লগ্নি করে থাকা মানুষেরা উৎসাহিত। কিন্তু মাথায় হাত পড়েছে তাঁদের, বাড়ির বিয়ের জন্য যাঁদের গয়না কিনতেই হবে। স্বর্ণ শিল্পমহলের দাবি, ঠিক এই কারণে চিন্তা বাড়ছে গয়নার ব্যবসায়ীদেরও। কারণ, কয়েক দিনের মধ্যে আচমকা চাহিদা অনেকটা কমেছে। দোকানে দোকানে ঘুরে খালি হাতে ফিরে যাচ্ছেন বহু ক্রেতা। ছোটখাটো সোনার আংটি বা হারের বিক্রিও হঠাৎ তলানিতে।
গয়না ব্যবসায়ীদের দাবি, দাম এতটা বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মধ্যবিত্ত ক্রেতাদের পাশাপাশি বিপাকে পড়েছেন ছোট গয়নার দোকানদারেরা। যেমন, বনগাঁর গয়না ব্যবসায়ী বিনয় সিংহ। তাঁর আক্ষেপ, “এমনিতেই বিয়ের মরসুম আপাতত শেষ। চৈত্র মাস পড়তে দেরি নেই। ফলে বিয়ের কেনাকাটায় ভাটা পড়তে শুরু করেছে। তার মধ্যেও যাঁরা আসছিলেন, দাম দেখে ফিরে যাচ্ছেন। যাঁরা কেনার তোড়জোড় করছিলেন, তাঁরা পরিকল্পনা পিছোচ্ছেন। ফলে বিক্রিবাটা আরও ঢিমে হবে। কোথায় ঠেকবে, জানি না।’’ একাংশের দাবি, সোনা ৬০,০০০ টাকা ছাড়ানোর পরেই বাড়ির গয়না বিক্রি করে বা পুরনো গয়না নতুন নকশায় গড়িয়ে নেওয়ার ঝোঁক বেড়েছিল। এখন বাজার কোন দিকে যাবে বোঝা যাচ্ছে না।
গরানহাটার পাইকারি গয়না বিক্রেতা চিত্তরঞ্জন পাঁজার দাবি, দোকানগুলিও কেনাকাটা কমিয়েছে। ফলে পাইকারি বিক্রি ৩০% কমেছে। তাঁর কথায়, ‘‘ব্যবসায়ীরা বলছেন, ক্রেতা দোকানে এসেও ফিরে যাচ্ছেন। দাম কমার জন্য অপেক্ষা করার কথা বলছেন। তাই দোকানগুলিও বেশি কিনে রাখতে সাহস পাচ্ছে না।’’
ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের এমডি সোমসুন্দরম পিআর বলেন, আমেরিকায় সুদ কমার ইঙ্গিত পেয়ে বিশ্ব জুড়ে সোনায় লগ্নি বাড়ছে। যা তার দামকে ঠেকে তুলেছে (এক আউন্স ২১২৭ ডলার)। এরই প্রভাব পড়ছে ভারত-সহ সর্বত্র। দামি ধাতু নিয়ে গবেষণাকারী ফিনেট ইন্ডিয়ার ডিরেক্টর জেনসন-এর দাবি, “সুদের হার কমানোর কথা ঘোষণা হলে দাম আরও কিছুটা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।’’
আর জেম অ্যান্ড জুয়েলারি ডোমেস্টিক কাউন্সিলের ডিরেক্টর সমর দে-র মতে, “ক্রেতাদের অনেকেই সোনার দাম বৃদ্ধির মোকাবিলা করার জন্য ঘরে থাকা পুরনো সোনা বিক্রি করে নতুন গয়না গড়াচ্ছেন।’’