দাম বেড়ে চলেছে সোনার। — ফাইল চিত্র।
লাফিয়ে বাড়ছে সোনার দাম। বৃহস্পতিবার কলকাতার বাজারে ২৪ ক্যারাটের ১০ গ্রাম পাকা সোনা পৌঁছে গিয়েছে ৫৫,৪৫০ টাকায়। জিএসটি ধরলে যা আরও অনেক বেশি, ৫৭,১১৩.৫০ টাকা। স্বর্ণশিল্প মহলের মতে, ইতিমধ্যেই এর প্রভাব পড়েছে গয়নার বাজারে। দাম বেড়েছে। পাল্লা দিয়ে কমেছে ক্রেতার সংখ্যা। যাঁদের এখনই না কিনে উপায় নেই, সমস্যায় পড়েছেন মূলত তাঁরাই।
বিশেষজ্ঞদের মতে, লাগাতার সুদের হার বৃদ্ধির জেরে বিশ্ব জুড়ে শেয়ার বাজার কাহিল। কারণ, আর্থিক বৃদ্ধি চোট খাওয়ায় আমেরিকা, ইউরোপে মন্দার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ভারতের অর্থনীতি তুলনায় পোক্ত থাকলেও, সাম্প্রতিক কালে জিডিপি বৃদ্ধির হার প্রত্যাশার থেকে কমেছে। তবু কোনও দেশের শীর্ষ ব্যাঙ্ক সুদ বাড়ানোর কৌশল থেকে সরার ইঙ্গিত দিচ্ছে না। এমনকি মূল্যবৃদ্ধির হার একটু মাথা নামানোর পরেও। তার উপরে বিভিন্ন দেশে কোভিড সংক্রমণ নিয়ে নতুন করে আশঙ্কা দানা বাঁধছে। তাঁদের মতে, এই সবের জেরে বহু লগ্নিকারীই শেয়ার বাজারে লগ্নির ঝুঁকি না নিয়ে ফের সোনা কেনার দিকে ঝুঁকছেন। ফলে এর দাম চড়ছে। আগামী দিনে তা আরও চড়তে পারে বলে আশঙ্কা একাংশের।
স্বর্ণশিল্প বাঁচাও কমিটির কার্যকরী সভাপতি সমর দে বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার ফলেই ভারতে দামি হচ্ছে সোনা। তাঁর কথায়, ‘‘সুদ বৃদ্ধিকে কেন্দ্রকে বিশ্বের আর্থিক বাজারে যে ডামাডোল সৃষ্টি হয়েছে, তার জেরেই সোনা ফের উঁচুতে উঠেছে। কারণ, আর্থিক ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিলে সব সময় একে আঁকড়ে ধরেন বিনিয়োগকারী। তবে এতে নতুন করে সমস্যায় পড়েছেন সাধারণ গ্রাহক। গয়নার দাম বাড়ার ফলে তার কাটতি কিছুটা কমেছে।’’ উল্লেখ্য, এর আগে ২০২০ সালের ৬ অগস্ট কর বাদে পাকা সোনা হয়েছিল ৫৬,৫০০ টাকা। যা এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ।
গয়না বিক্রেতাদের দাবি, অনেক ক্রেতাই চলতি মাসের শুরু থেকে দাম একটু কমার অপেক্ষায় বসে আছেন। কিন্তু তাঁদের হতাশ করে ক্রমাগত তা বেড়েই চলেছে। সংশ্লিষ্ট মহল মনে করাচ্ছে, বছর তিনেক ধরে করোনার মধ্যে বার বার ভারত-সহ সর্বত্র যখনই অর্থনীতি নিয়ে দুশ্চিন্তা বেড়েছে, তখনই সোনা কিনতে নেমেছেন বহু মানুষ। যা তার দাম বাড়িয়েছে। কারণ, এই দামি হলুদ ধাতুকে লগ্নির অন্যতম সুরক্ষিত বর্ম হিসাবে গণ্য করা হয়।
জেম অ্যান্ড জুয়েলারি এক্সপোর্ট প্রোমোশন কাউন্সিলের পূর্বাঞ্চলের চেয়ারম্যান পঙ্কজ পারেখের দাবি, ‘‘সোনার দাম বাড়ার অন্যতম কারণ কোভিডের আশঙ্কা। সংক্রমণ বাড়লে বিশ্ব বাজারে তা আরও চড়বে। তার আঁচ পড়বে ভারতের বাজারেও।’’