—প্রতীকী চিত্র।
এক সপ্তাহে ২৬৫০ টাকা। এ ভাবেই দৌড়চ্ছে সোনার দাম। ৩০ মার্চ কলকাতার বাজারে যে খুচরো পাকা সোনার (১০ গ্রাম ২৪ ক্যারাট) দাম ছিল ৬৯,১০০ টাকা, ক্রেতা-বিক্রেতা ও কারিগরদের চিন্তা বাড়িয়ে সেটাই এই শনিবার পৌঁছেছে ৭১,৭৫০ টাকায়। জিএসটি যোগ করলে দর ৭৩,৯০২.৫০ টাকা। পাকা সোনা এ ভাবে চড়ায় বেড়েছে গয়নার সোনার দাম। পিছিয়ে নেই রুপোও। শুক্রবারের রেকর্ড ভেঙে এ দিন খুচরো রুপোর কেজি দাঁড়িয়েছে ৮১,০০০ টাকায়। কর ধরলে ৮৩,৪৩০ টাকা।
পয়লা বৈশাখ ও তার পরে অক্ষয় তৃতীয়ার মুখে সোনার দাম এতটা চড়ে যাওয়ায় মাথায় হাত গয়না বিক্রেতা, বিশেষত মফস্সলের ছোট দোকানগুলির। নদিয়ার পায়রাডাঙ্গার ছোট বিপণির মালিক রঞ্জিত রায় বলেন, ‘‘বিক্রি প্রায় বন্ধ। আমার ক্রেতারা মূলত কৃষক। এত দাম দিয়ে গয়না কেনার ক্ষমতা তাঁদের নেই। দর কমার লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না। সংসার চালাতে অন্য কিছু করার কথা ভাবছি।’’ বৌবাজারে বরাত নিয়ে গয়না তৈরি করেন সুদর্শন ঘোষ। তিনিও বলেন, “বরাত নেই বলে কারিগরদের কাজ দিতে পারছি না। অনেকে তাই অন্য কাজ খুঁজছেন।’’
স্বর্ণ শিল্পমহলের মতে, বিশ্ব বাজারে সোনার দাম দ্রুত অনেকটা উপরে ওঠায় দেশেও দর বাড়ছে। ন্যাশনাল জেম অ্যান্ড জুয়েলারি ডোমেস্টিক কাউন্সিলের ডিরেক্টর সমর দে-র দাবি, “গত ১ এপ্রিল বিশ্ব বাজারে আউন্সে সোনা ছিল ২২৫৫ ডলার। শনিবার হয়েছে ২৩৩০ ডলার। আগামী দিনে আরও বাড়বে বলে ধারণা। যে সব ক্রেতা দাম কমার আশায় ছিলেন, তাঁরাও তা বুঝতে শুরু করেছেন। তাই আরও দাম বাড়ার আগেই তাঁরা পয়লা বৈশাখ এবং অক্ষয় তৃতীয়ার গয়না কিনতে বাজারে আসবেন বলে মনে হয়।’’
নতুন বছর ও অক্ষয় তৃতীয়া ছাড়াও সামনে রয়েছে বিয়ের মরসুম। বড় বিপণিগুলির বক্তব্য, চড়া দামের মধ্যেও যাতে ক্রেতারা আসেন, সে জন্য পরের সপ্তাহ থেকেই দামে ছাড়-সহ বিভিন্ন সুবিধা আসতে শুরু করবে। সেনকো গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডসের এমডি শুভঙ্কর সেন বলেন, “বেশি দামের কারণে কম ক্যারাটের (১৮ ক্যারাট) হাল্কা নকশার গয়নায় জোর দিচ্ছি। তবে বিয়ের জন্য কম ওজনের হলেও ২২ ক্যারাটের গয়নাই বেশি বিক্রি হবে বলে।’’ এই পরিস্থিতিতে ফের সোনায় আমদানি শুল্ক কমানোর দাবি জানিয়েছেন গয়না ব্যবসায়ীরা। বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পি সমিতির সাধারণ সম্পাদক টগর পোদ্দার বলেন, “গয়না ব্যবসায়ী এবং কারিগরদের বাঁচিয়ে রাখতে হলে আমদানি শুল্ক কমিয়ে কেন্দ্রকে তাঁদের পাশে দাঁড়াতে হবে।’’