প্রতীকী ছবি।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় থাকা বাড়ির ‘কার্পেট এরিয়া’ এক লাফে ৩৩% বাড়াল কেন্দ্র। অর্থাৎ আরও বেশি সংখ্যক মানুষ ওই কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা পাবেন। এর দৌলতে বাজার বাড়বে বলে আশায় বুক বাঁধছে আবাসন শিল্পও।
মঙ্গলবার আবাসন মন্ত্রকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বার্ষিক আয় ১২ লক্ষ থেকে ১৮ লক্ষ টাকা হলে, ২০০ বর্গ মিটারের ফ্ল্যাট কেনার জন্য গৃহঋণের সুদে ২.৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ভর্তুকি দেওয়া হবে। এত দিন এই প্রকল্পে এমআইজি টু (মিডল ইনকাম গ্রুপ টু) ক্রেতাদের ফ্ল্যাটের মাপের ঊর্ধ্বসীমা ছিল ১৫০ বর্গ মিটার। এমআইজি ১ (মিডল ইনকাম গ্রুপ ওয়ান) ক্রেতাদের ক্ষেত্রে এই ঊর্ধ্বসীমা ছিল ১২০ বর্গ মিটার। তা বেড়ে দাঁড়াল ১৬০ বর্গ মিটার।
চলতি মাসেই অগ্রাধিকারের তালিকায় থাকা ঋণের আওতায় গৃহঋণের ঊর্ধ্বসীমা মেট্রো শহরে ২৮ লক্ষ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ লক্ষ টাকা এবং অন্য জায়গায় ২০ লক্ষ থেকে বাড়িয়ে ২৫ লক্ষ টাকা করেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। এই জোড়া প্রাপ্তিতে বাজার ওঠার সম্ভাবনা দেখছে আবাসন শিল্প। বিশেষত দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্তরের শহরে বাজার চাঙ্গা করতে এই ঘোষণা অনেকটাই কাজে আসবে বলে দাবি নির্মাণ সংস্থার সংগঠন ক্রেডাইয়ের।
মধ্যবিত্ত বাজার বরাবরই আবাসন শিল্পের বৈতরণি পার করেছে। ২০০৯ সালের মন্দা বা ২০১৬-র নোট সঙ্কট। ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে ভরসা কম দামি আবাসন। জিএসটি-র চড়া করের কোপ থেকে বাঁচতেও মধ্যবিত্ত বাজারকে আঁকড়ে ধরেছে এই শিল্প।
এ রাজ্যেও একই চিত্র। পশ্চিমবঙ্গে মধ্যবিত্ত আবাসনের চাহিদায় টান কখনও পড়েনি বলে মনে করেন ক্রেডাই বেঙ্গলের প্রধান নন্দু বেলানি। তবে একই সঙ্গে তাঁর দাবি, শুধু ফ্ল্যাটের মাপের ঊর্ধ্বসীমা বাড়ালেই হবে না। যোগ্যতার মাপকাঠিতে আয়ের অঙ্কও বাড়ানো উচিত। কারণ, ২০০ বর্গ মিটারের বাড়ির দাম কম পক্ষে ৫০ লক্ষ টাকা হবে। তা কেনার জন্য আয়ের যে ঊর্ধ্বসীমা ধরা হয়েছে, তার সঙ্গে বাস্তবের মিল কমই বলে জানান বেলানি।
তবে এই ঘোষণা বাজার তুলতে সাহায্য করবে বলেই মানছে স্থানীয় আবাসন সংস্থাগুলি। সিদ্ধা গোষ্ঠীর সঞ্জয় জৈনের দাবি, ক্রেতাদের পাশাপাশি এতে লাভ হবে নির্মাতাদেরও। তিনি বলেন, ‘‘এই মাপের বাড়ি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় আসায় আরও বেশি আবাসন প্রকল্প ৮% জিএসটির (কার্যকর হার) সুযোগ পাবে। না হলে ১২% জিএসটি দিতে হয় তুলনামূলক ভাবে দামি বাড়ির প্রকল্পগুলিকে।’’
বড় শহরের তুলনায় ছোট শহর ও শহরতলিতে এই ঘোষণার ইতিবাচক ফল পাওয়া যাবে বলে মত বেঙ্গল সৃষ্টির অভিষেক ভরদ্বাজ ও জৈন গোষ্ঠীর ঋষি জৈনের। তাঁদের দাবি, শহরে ২০০ বর্গ মিটারের বাড়ির দাম মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে। কিন্তু শহরতলিতে তা তুলনায় কম। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় চলে আসার পরে তার চাহিদাও বাড়বে বলে আশা তাঁদের।