ফাইল চিত্র।
বিদ্যুতের চাহিদা প্রায় ২০% বাড়লেও কয়লার সঙ্কটে তা মেটানো যাচ্ছে না বলে অভিযোগ। ফলে দেশের বহু জায়গায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটছে। পরিস্থিতি সামলাতে আমদানি করা কয়লায় চলা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিকে পূর্ণ উৎপাদন ক্ষমতা চালু রাখার নির্দেশ দিল কেন্দ্র। আর তাতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছে সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ। কারণ, বিশ্ব বাজারে কয়লার দাম বিপুল বেড়েছে। আমদানির নির্দেশ বহু বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং রাজ্যকে চাপে ফেলবে বলে আশঙ্কা তাদের।
অল ইন্ডিয়া পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ার্স ফেডারেশনের (এআইপিইএফ) দাবি, দেশীয় জোগান যথেষ্ট না থাকায় কেন্দ্র যখন জোর করছে কয়লা আমদানি করতে, তখন প্রতিটি রাজ্যকে বাড়তি দামের জন্য ক্ষতিপূরণও দিক তারা। এই আর্থিক সাহায্য না দিলে বিদ্যুৎ পরিষেবা ক্ষেত্রের আর্থিক অবস্থা খারাপ হবে। বিদ্যুৎ মন্ত্রকের দাবি, দেশে কয়লা উৎপাদন বাড়লেও বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধির তুলনায় তা কম। তাই রাজ্যগুলিকেও ১০% কয়লা আমদানি করতে হবে। তাদের মতে, চড়া দরে কেনা কয়লায় বিদ্যুৎ উৎপাদন সংস্থাগুলির খরচ বাড়বে ঠিকই। তবে বণ্টন সংস্থাগুলিকে তারা সেই বাড়তি খরচ ধরে কী দরে বিদ্যুৎ বিক্রি করবে, তা ঠিক করতে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গড়া হয়েছে। ফলে আমদানির কয়লায় বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি উৎপাদন করতে রাজি হবে বলেই মনে করছে কেন্দ্রীয় সরকার।
তবে কয়লা নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য চাপানউতোর অব্যাহত। কেন্দ্রের দাবি, রেল-সড়ক পথে জোগানের জন্য কয়লা বরাদ্দ হলেও, তা নেওয়ার ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ-সহ কয়েকটি রাজ্যের ভূমিকা সন্তোষজনক নয়। বৃহস্পতিবার রাজ্যগুলির সঙ্গে বৈঠকে এই অভিযোগ করেন বিদ্যুৎমন্ত্রী আর কে সিংহ এবং সচিব অলোক কুমার। বরাদ্দ না নিলে অন্য রাজ্যকে দিয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন। অভিযোগ অস্বীকার করে পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের (পিডিসিএল) দাবি, রাজ্যকে প্রথমে কয়লা বরাদ্দ করেনি কেন্দ্র। নিগমের খনি থেকে তুলে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে পাঠানো হচ্ছিল। সম্প্রতি ১.৫ লক্ষ টন কয়লা রেল-সড়ক পথে নিতে বলা হয়। ওড়িশা থেকে তা আনতে দরকার প্রায় ৩৬টি রেল-রেক। দু’দিনে ২০ হাজার টন মতো আনা হয়েছে। বাকিটাও নেওয়া হবে। এই প্রসঙ্গে রাজ্য প্রশাসন সূত্রের আরও দাবি, কেন্দ্র পর্যাপ্ত সংখ্যায় রেল-রেক জোগাতে পারছে না। আর সেই দায় এড়িয়ে কয়লা নেওয়ার দায়িত্ব চাপাচ্ছে রাজ্যগুলির কাঁধে। কিন্তু দূরের খনি থেকে আনতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছে অনেকে।