প্রতীকী ছবি।
অতিমারির ধাক্কায় ব্যাঙ্ক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি জেরবার। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের রিপোর্টে সম্প্রতি জানানো হয়েছে, গত মার্চে দেশের নথিভুক্ত ব্যাঙ্কগুলির অনুৎপাদক সম্পদের (এনপিএ) হার ছিল ৮.৫%। করোনার প্রভাবে চলতি অর্থবর্ষের শেষে তা ১২.৫ শতাংশে পৌঁছতে পারে। এমনকি মাথা তুলতে পারে ১৪.৭% পর্যন্তও। এই পরিস্থিতিতে বণিকসভা সিআইআইয়ের প্রস্তাব, ব্যাঙ্কগুলির এনপিএ-র বোঝা কমিয়ে আনতে তৈরি করা হোক একাধিক ‘ব্যাড ব্যাঙ্ক’। যা ব্যাঙ্কের হিসেবের খাতা পরিষ্কার করতে সাহায্য করবে। হিসেবের খাতা পরিষ্কার করতে পারলে তাদের পুঁজির জন্য আর সরকারের উপর নির্ভর করতে হবে না। নিজেরাই তা সহজে সংগ্রহ করে নিতে পারবে বাজার থেকে। বাড়াতে পারবে ঋণ। তাতে লাভ সরকারেরও।
‘ব্যাড ব্যাঙ্ক’ আদতে এক ধরনের আর্থিক প্রতিষ্ঠান, যারা ব্যাঙ্কগুলির থেকে এনপিএ কিনে নিয়ে বাজারে বিক্রি করবে। তার ফলে ব্যাঙ্কগুলির হিসেবের খাতা যেমন পরিষ্কার হবে, তেমনই উদ্ধার হবে অনাদায়ি ঋণের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সম্প্রতি কেন্দ্রের কাছে এই সংক্রান্ত প্রস্তাব জমা দিয়েছে সিআইআই। বণিকসভাটির প্রেসিডেন্ট উদয় কোটাক বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেছেন, ‘‘অতিমারির ফলে যে ভাবে এনপিএ বাড়ছে, তার সমাধানের জন্য বাজার নির্ভর কোনও ব্যবস্থা জরুরি। দেশ এবং বিশ্ব বাজারে এখন পর্যাপ্ত নগদ রয়েছে। তাকে কাজে লাগিয়ে ব্যাঙ্কের হিসেবের খাতা পরিষ্কার করতে হলে একাধিক ব্যাড ব্যাঙ্ক তৈরি করা যেতে পারে। তাতে স্বচ্ছ ভাবে সমস্যার সমাধান করা যাবে। বাড়ানো যাবে ঋণ দেওয়া।’’
এখন সম্পদ পুনর্গঠন সংস্থা এবং সিকিউরিটি রিসিটের মাধ্যমে এনপিএ বিক্রির চল রয়েছে। কিন্তু তাতে এনপিএ কমানোর কাজে বিশেষ গতি আসছে না বলে দাবি সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের। অনাদায়ি ঋণের ১০-১২ শতাংশের বেশি উদ্ধার করাও সম্ভব হচ্ছে না। সিআইআইয়ের পরামর্শ, তার বদলে যদি ব্যাড ব্যাঙ্কের মাধ্যমে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থা এবং অলটারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডগুলিকে (এআইএফ) এনপিএ বিক্রি করা যায়, তা হলে ফল অপেক্ষাকৃত ভাল হতে পারে। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক এবং সেবির নজরদারিতেই ব্যবস্থাটি পরিচালনা করতে হবে।