ফাইল চিত্র।
অতিমারির ধাক্কায় তলিয়ে গিয়েছে দেশের অর্থনীতি। চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে ২৩.৯% জিডিপি সঙ্কোচনের পরে দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকও তা কমেছে ৭.৫%। এমনকি খোদ সরকারি পূর্বাভাসই বলছে যে অর্থবর্ষের পুরোটা জুড়ে সঙ্কোচনের হার দাঁড়াবে ৭.৭%। বিভিন্ন উপদেষ্টা সংস্থাও বলছে যে, কর আদায় কমায় রাজকোষ ঘাটতি দাঁড়াবে ৭.৫%, লক্ষ্যমাত্রার প্রায় দ্বিগুণ। বাড়ছে বেকারত্ব। মুখ থুবড়ে পড়ছে রফতানি। কিন্তু এর মধ্যে দাঁড়িয়েও অর্থনীতি চার বছরে ৫ লক্ষ কোটি ডলারে পৌঁছনোর স্বপ্ন ফেরি করছেন কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল। শনিবার প্রবাসী ভারতীয় দিবসে তাঁর ঘোষণা, সংস্কারের হাত ধরে সেই লক্ষ্যে পৌঁছতে সব রকম ব্যবস্থা করছে মোদী সরকার।
গত ফেব্রুয়ারির বাজেটে ২০২০-২১ অর্থবর্ষের জন্য ৭.৮ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছিল কেন্দ্র। পরে করোনার জন্য তা প্রায় ৫০% বাড়িয়ে ১২ লক্ষ কোটি করার কথা জানায় তারা। আর বাজেট অনুসারে রাজকোষ ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয় ৭.৯৬ লক্ষ কোটি টাকা (জিডিপির ৩.৫%)। কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে, অর্থবর্ষের প্রথম আট মাসেই সরকারের রাজকোষ ঘাটতি পৌঁছে গিয়েছে ১০.৭ লক্ষ কোটি টাকায়। যা বাজেট লক্ষ্যমাত্রার ১৩৫%।
ইঅ্যান্ডওয়াই এবং ইক্রার মতো উপদেষ্টা মূল্যায়ন সংস্থার দাবি, পরিস্থিতি এতটাই ঘোরালো যে অর্থবর্ষ শেষে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের ৩.৫% ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রা প্রায় দ্বিগুণ ছাপাতে পারে। ইক্রার মুখ্য অর্থনীতিবিদ অদিতি নায়ারের যেমন মত, তা হতে পারে ১৪.৫ লক্ষ কোটি টাকা বা জিডিপির ৭.৫%। যার মধ্যে কেন্দ্রের ঋণ ছাড়াও থাকবে স্বল্প সঞ্চয় এবং ট্রেজ়ারি বিল।
কেন্দ্র যদিও এর মধ্যেও অর্থনীতির সুদিন ফেরার কথাই বারবার ঘোষণা করছে। আজ গয়ালেরও কথায়, উৎপাদন, দক্ষতা এবং পণ্যের মান বাড়ানোর সব রকম চেষ্টা করা হচ্ছে। যাতে ভারতের শিল্প আরও বেশি করে বিদেশেও রফতানির সুযোগ পায়। আত্মনির্ভর ভারত প্রকল্পও আনা হয়েছে সে কথা মাথা রেখেই। আর সে জন্য জোর দেওয়া হচ্ছে ব্যবসার পরিবেশ সহজ করার উপরে। আর এই সমস্ত সংস্কারের হাত ধরেই ভারত ২০২৫ সালের মধ্যে ৫ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত হবে বলে দাবি তাঁর।