—প্রতীকী চিত্র।
পেনশন প্রকল্প এনপিএস-এর তহবিল থেকে একলপ্তে ৬০% টাকা তুলে নেওয়ার ব্যবস্থা আগেই চালু করেছে নিয়ন্ত্রক পিএফআরডিএ। এখন বয়স ৬০ বছর পেরোলে লগ্নিকারী তা নির্দিষ্ট সময় অন্তর পেনশনের মতো তোলার সুবিধাও পেতে পারেন। নিয়ন্ত্রক জানিয়েছে, সম্প্রতি আনা এই প্রকল্পের নাম সিস্টেমেটিক লাম্পসাম উইথড্রয়াল (এসএলডব্লিউ)।
অবসর কিংবা অন্য কারণে এনপিএস থেকে বেরিয়ে এলে লগ্নিকারীকে হাতে আসা টাকার অন্তত ৪০% দিয়ে বাজার থেকে পেনশন প্রকল্প (অ্যানুইটি) কিনতে হয়। তার থেকেই মাসে মাসে পেনশন মেলে। বাকি ৬০% নিজের মতো খরচ করা যায়। পুরো টাকায় আয়কর ছাড় আছে। নতুন প্রকল্পেও করছাড় মিলবে।
এসএলডব্লিউ প্রকল্পে গ্রাহক ৬০ বছর পেরোলেই ওই ৬০% টাকা প্রতি মাসে, তিন মাসে, ছ’মাসে বা প্রতি বছরে তুলতে পারেন। কত করে তুলবেন, তা তিনিই ঠিক করবেন। তবে অ্যানুইটি কেনার জন্য ৪০% টাকায় হাত দেওয়া যাবে না। অ্যাকাউন্টের সমস্ত টাকা বাজারে আগের মতোই লগ্নি হবে। ফলে তহবিল বাড়তে থাকবে। যদিও প্রকল্পে গ্রাহক আর লগ্নি করতে পারবেন না। ৭৫ বছর বয়স পর্যন্ত এই প্রক্রিয়া চলবে। তার পরে সমস্ত টাকা তুলে তার থেকে কমপক্ষে ৪০% টাকা দিয়ে অ্যানুইটি কিনতে হবে। এর মধ্যে লগ্নিকারীর মৃত্যু হলে, তাঁর নমিনি তহবিলের সব টাকাই ফেরত পাবেন সুদ সমেত।
পিএফআরডিএ-র চেয়ারম্যান দীপক মোহান্তি শুক্রবার কলকাতায় জানান, “৬০% টাকা একলপ্তে তুলে নিলে তাতে যেমন আয়কর দিতে হয় না, তেমনই নতুন প্রকল্পে ওই টাকা ধাপে ধাপে তুললেও করে ছাড় রয়েছে।’’ মোহান্তির দাবি, এনপিএসের তহবিল শেয়ার ভিত্তিক প্রকল্পে খাটিয়ে বছরে সাধারণত গড়ে ১৪% রিটার্ন আসে। শেয়ার ও ঋণপত্র সম্বলিত প্রকল্পে তা ৯.৫%। তাই নতুন প্রকল্পের আকর্ষণ হল— পুরো তহবিল তুলে না নেওয়ায় তা আগের মতোই এই সব জায়গায় লগ্নি হবে এবং ব্যাঙ্কের সুদের থেকে বেশি রিটার্নের সম্ভাবনা থাকবে। আবার পেনশন হিসেবেও নির্দিষ্ট সময় অন্তর টাকা আসবে। এনপিএসে মোট গ্রাহক (গত মাস পর্যন্ত) ১.৫ কোটি। এর মধ্যে ৯২ লক্ষই সরকারি কর্মী। যাঁদের বাধ্যতামূলক ভাবে এই প্রকল্পে শামিল হতে হয়। পিএফআরডিএ-র লক্ষ্য, চলতি অর্থবর্ষে সরকারি বা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বাইরে থেকে ১১ লক্ষ লগ্নিকারীকে এনপিএসে টেনে আনা। গত বছর তা ছিল ৯.৭ লক্ষ। মোহান্তি জানান, এই অর্থবর্ষের শেষে তহবিলের অঙ্ক ১৫ লক্ষ কোটি টাকায় নিয়ে যেতে চান তাঁরা। গত অর্থবর্ষের শেষে ছিল ১২.৫ লক্ষ কোটি।
এ দিকে, অটল পেনশন যোজনার আওতায় থাকা গ্রাহক সংখ্যার নিরিখে পূর্বাঞ্চলে পশ্চিমবঙ্গ দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বলে জানান মোহান্তি। প্রথমে আছে বিহার, তৃতীয় ওড়িশা।