ছবি প্রতীকী
তেলের চড়া দর রোজই নতুন রেকর্ড গড়ছে দেশে। মঙ্গলবার মুম্বইয়ে এই প্রথম লিটারে পেট্রল পেরিয়েছে ৯৯ টাকা। পাঁচ রাজ্যে ভোটের ফল ঘোষণার পরে এখনও পর্যন্ত দশ দিন পেট্রল-ডিজেলের দর বাড়িয়েছে তেল সংস্থাগুলি (বুধবার অবশ্য তা একই রয়েছে)। এর আগেই রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশের বহু জায়গায় তা ১০০ টাকা পেরিয়েছে। তার উপরে এ দিন বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দর ব্যারেলে ৭০ ডলার ছুঁয়েছে। ফলে প্রশ্ন উঠছে, এই দাম যদিও আরও ওঠে, তা হলে দেশে জ্বালানির দর কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে? আমজনতাকে স্বস্তি দিতে কেন এখনও কর ছাঁটাই করা হচ্ছে না, তা নিয়েও ক্ষোভ বাড়ছে। বিশেষত যখন তেলের দাম বাড়ার প্রভাব পড়ছে পণ্য পরিবহণে, মাথাচাড়া দিচ্ছে মূল্যবৃদ্ধি। যদিও সেই আর্জিতে কান দেওয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না মোদী সরকারের তরফে।
এ দিন মুম্বইয়ে লিটারে পেট্রল বিক্রি হয়েছে ৯৯.১৪ টাকায়। কলকাতা ও দিল্লিতে তা প্রায় ৯৩ টাকা ছুঁইছুঁই। এর আগে রাজস্থানের শ্রী গঙ্গানগরে প্রথম শতরান হাঁকিয়েছিল পেট্রল। রাজ্যের রাজধানী হিসেবে প্রথম সেই রেকর্ড গড়েছে ভোপাল। ডিজেলও বহু জায়গাতেই ৯০ টাকা ছাড়িয়েছে। একে মোদী সরকার সাত বছরে তেলের উৎপাদন শুল্ক বিপুল বাড়িয়েছে। সেই সঙ্গে রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশের মতো কিছু রাজ্যের ভ্যাটের হারও চড়া। সব মিলিয়ে বিভিন্ন রাজ্যে লকডাউনে তেলের চাহিদা কমলেও যেটুকু গাড়ি চলছে (বিশেষ করে পণ্য পরিবহণে), তাতে সেই খরচ বাড়ছে। আর অনেক সময়েই তা প্রতিফলিত হচ্ছে জিনিসপত্রের দামে। যা আখেরে করোনায় আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে আমজনতার পকেটের চাপ বাড়াচ্ছে।
কেন্দ্র অবশ্য বরাবর দেশে তেলের দর বৃদ্ধির জন্য অশোধিত তেলের দরকে দায়ী করছে। সেই দাম ব্যারেলে ৭০ ডলার ছুঁয়ে মঙ্গলবার ভারতীয় সময় সন্ধ্যায় নেমেছে ফের ৬৯ ডলারের নীচে। সংশ্লিষ্ট মহলের প্রশ্ন, অশোধিত তেলের দর সম্প্রতি দু’এক ডলার কমলে দেশের বাজারে তেলের দাম কমেনি। বড়জ়োড় অপরিবর্তিত থেকেছে। কিন্তু সে রকমই সামান্য বাড়লে কেন সঙ্গে সঙ্গে দেশে পেট্রল-ডিজেলের দাম বাড়ে। উপরন্তু, সৌদি-সহ ওপেক গোষ্ঠীর কিছু দেশের বদলে অন্য দেশ থেকে সস্তায় তেল কিনছে ভারতীয় সংস্থাগুলি। কেনই বা তার প্রতিফলনও দেশের বাজারে পড়ে না? এখনই যদি এই অবস্থা হয়, তা হলে বিশ্ব বাজারে তেলের দর আরও বাড়লে ভারতে তা কতটা উঠবে, সেই আশঙ্কাতেই আপাতত কাঁটা সকলে।