রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর ডি সুব্বারাও।
গত লোকসভা নির্বাচনে জয়ের পরে দেশের অর্থনীতিকে ২০২৫ সালের মধ্যে ৫ লক্ষ কোটি ডলারে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই সময়ে অর্থনীতি মন্থর হতে শুরু করায় তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এর পর অতিমারির ঢেউ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে। সেই বিতর্কে সরাসরি ঢুকতে না চাইলেও রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর ডি সুব্বারাওয়ের বক্তব্য, ওই লক্ষ্য ছোঁয়ার ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানই সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। আর ধর্ম, বর্ণ, ভাষা— সব ক্ষেত্রে সম্প্রীতির বাতাবরণ না থাকলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা সম্ভব নয়। তাঁর বার্তা, আর্থিক উন্নতির এই গতিপথে কতিপয় বিত্তশালীর সম্পদ বাড়লেই চলবে না। নীচের তলার মানুষের কাছেও সেই সুফল পৌঁছে দিতে হবে।
বিশ্বের প্রেক্ষিতে ভারতের অর্থনীতি ও ভারত-আমেরিকা বাণিজ্য নিয়ে বুধবার ইন্দো আমেরিকান চেম্বারের পূর্বাঞ্চলীয় পরিষদের সভায় সুব্বারাও গত ৭৫ বছরে শিক্ষা, স্বাস্থ্য-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারতের অগ্রগতির ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, ৫ লক্ষ কোটি ডলারের লক্ষ্যপূরণে সব চেয়ে জরুরি কর্মসংস্থান। সে জন্য চাই লগ্নি। তাঁর পরামর্শ, লগ্নিকারীদের আস্থা অর্জন করতে আর্থিক স্থিতিশীলতা, নিশ্চিত পরিবেশের পাশাপাশি আইনের শাসন, সম্প্রীতি আবহ বজায় রাখাও জরুরি। ঠিক যে কথা অতীতে বলেছেন কৌশিক বসু, রঘুরাম রাজন-সহ বিভিন্ন অর্থনীতিবিদ।
এ দিন সুব্বারাও বলেন, ‘‘৫ লক্ষ কোটি ডলার মানে ১০% ধনীর আরও বিত্তশালী হওয়া নয়। নীচের তলার ৬০ কোটি মানুষকেও বৃদ্ধির অংশীদার করতে হবে।’’ লগ্নি ও কাজের কথা বলতে গিয়ে কৃষি ও পরিষেবার চেয়ে উৎপাদনমুখী শিল্পে লগ্নিতে বেশি জোর দেন তিনি। জানান, বাস্তবে সাম্প্রতিককালে দেশে সব চেয়ে বেশি কাজে যোগ দিয়েছেন নিরাপত্তাকর্মী। প্রশাসনিক সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার কথা বলে তাঁর বক্তব্য, এ ক্ষেত্রে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদেরও দায় আছে।