পি চিদম্বরম।
ছোট-মাঝারি শিল্পের সঙ্গে জড়িত ১১ কোটি মানুষের সঙ্গে আরও ১ কোটি মানুষের এপ্রিলের বেতন নিশ্চিত করার জন্য আমেরিকার ধাঁচে ‘পে চেক প্রোটেকশন প্রোগ্রাম’-এর দাবি তুললেন পি চিদম্বরম। প্রাক্তন অর্থমন্ত্রীর যুক্তি, করোনা ও লকডাউন পরিস্থিতিতে আমজনতাকে সুরাহা দিতে যদি সরকারের রাজকোষ ঘাটতি বাড়ে, বাড়ুক। প্রয়োজনে টাকা ছাপিয়ে সেই ঘাটতির কথাও ভাবা হোক। কিন্তু আগে ঋণ করে খরচ করা হোক।
চিদম্বরম আজ কংগ্রেসের হয়ে মোদী সরকারের কাছে তিনটি দাবি তুলেছেন। এক, ৬.৩ কোটি ছোট-মাঝারি শিল্পের জন্য ১ লক্ষ কোটি টাকার ঋণ গ্যারান্টি তহবিল। যাতে এই শিল্পের কর্ণধারেরা ব্যাঙ্ক থেকে ধার পান। দুই, ছোট-মাঝারি শিল্পের সঙ্গে জড়িত ১১ কোটি মানুষের এপ্রিলের বেতন নিশ্চিত করতে ১ লক্ষ কোটি টাকার সাহায্য। তিন, এর বাইরে ১ কোটি মানুষ, যাঁদের বেতন বছরে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা বা মাসে ৩০ হাজার টাকার কম, তাদের এপ্রিলের বেতন নিশ্চিত করতে ‘পে চেক প্রোটেকশন প্রোগ্রাম’। চিদম্বরমের যুক্তি, গড় বেতন ১৫ হাজার টাকা ধরলে এর জন্য মাত্র ১৫ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে। যাঁরা এতদিন আয়কর দিয়েছেন, তাঁদের জীবন-জীবিকা বাঁচাতে সামান্য অঙ্ক।
কিন্তু যে কোনও আর্থিক প্যাকেজ দিতে গেলেই তো রাজকোষ ঘাটতি বাড়বে। সরকারকে আরও ধার করতে হবে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কি টাকা ছাপিয়ে সেই সরকারকে ধার দেওয়ার কথা ভাবতে পারে?
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই বলেছিলেন, প্রথাগত, সাবধানী পথে হেঁটে এই পাহাড়প্রমাণ সমস্যার মোকাবিলা করা শক্ত। প্রয়োজনে টাকা ছাপিয়েও কম আয়ের মানুষকে দেওয়া জরুরি। মূল্যবৃদ্ধির হার মাথাচাড়া দেবে কি না, ভাবার সময় এখন নয়। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নরও এই সম্ভাবনা উড়িয়ে দেননি।
কংগ্রেস এ বিষয়ে এতদিন অবস্থান স্পষ্ট করেননি। আজ চিদম্বরম বলেন, “ঘাটতি ৩.৫% থেকে বেড়ে ৪.৫ বা ৫% হলে হোক। ঘাটতির কতখানি টাকা ছাপিয়ে পূরণ হবে, তা ঘাটতির অঙ্ক জেনে পরে ঠিক করা যেতে পারে। রক্ষণশীল অর্থনীতিবিদ ও রিজার্ভ ব্যাঙ্ক প্রধানরাও বলেছেন, প্রয়োজনে ঘাটতির একাংশ পূরণে টাকা ছাপানোর কথা। সি রঙ্গরাজন, রঘুরাম রাজন, এম গোবিন্দ রাও, অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যন, অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে এটা কোনও লক্ষণরেখার বাইরের এলাকা নয়।” তাঁর যুক্তি, রাজ্যগুলিকেও বেশি খরচ করতে হচ্ছে বলে আর্থিক শৃঙ্খলা ভেঙে রাজকোষ ঘাটতি বাড়ানোর অনুমতি দিতে হবে।