প্রতীকী চিত্র।
গত বছর ভারতে শেয়ার বাজারের বিপুল উত্থানকে কাজে লাগিয়ে প্রথম শেয়ার (আইপিও) ছেড়ে মোট ১.২ লক্ষ কোটি টাকার পুঁজি সংগ্রহ করেছিল ৬৩টি সংস্থা। নতুন বছরে ওমিক্রনের হানা কিংবা করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা মাথাচাড়া দিলেও, অন্তত মার্চ পর্যন্ত আইপিও-র বাজারে ভাটা পড়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। মার্চেন্ট ব্যাঙ্কারদের সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত ২৩টি সংস্থা এই তিন মাসে বাজারে নথিভুক্তির জন্য নিয়ন্ত্রক সেবির কাছে সম্মতি চাওয়ার পথে পা বাড়িয়েছে। মোট ৪৪,০০০ কোটি টাকা সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে তারা। এগুলির অনেকেই নতুন প্রযুক্তি সংস্থা।
অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানো, সুদের হার ঐতিহাসিক নিচুতে নামা, সরকার ও রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে বাজারে নগদের অভাব ছিল না। ফলে প্রাতিষ্ঠানিক ও বড় লগ্নিকারীদের পাশাপাশি, সাধারণ লগ্নিকারীরাও আইপিও কেনার জন্য অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি ঝাঁপিয়েছিলেন। তার সুফল পেয়েছে শেয়ার ছেড়ে পুঁজি সংগ্রহ করা সংস্থাগুলিও। ২০২২ সালের প্রথম তিন মাসেও আইপিও ছাড়ার ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকছে বলেই ইঙ্গিত। রাষ্ট্রায়ত্ত বিমা সংস্থা জীবন বিমা নিগম (এলআইসি) মার্চের মধ্যেই শেয়ার ছাড়ার চেষ্টা করছে। তবে এত বড় সংস্থার পক্ষে এই সময়ে তা করা সম্ভব হবে কি না, সে ব্যাপারে সন্দিহান বাজার বিশ্লেষকেরা।
বাজার সূত্রের খবর, অধিকাংশ সংস্থাই ধার কমাতে, ব্যবসা সম্প্রসারণে, অন্য সংস্থা অধিগ্রহণে এবং সংস্থা পরিচালনায় কাজে লাগাতে চায় আইপিও-র মাধ্যমে সংগ্রহ করা পুঁজি। অনেক শেয়ারহোল্ডারের আবার উদ্দেশ্য থাকে আইপিও-র মাধ্যমে লাভের টাকা তুলে সংস্থা ছাড়ার। লার্নঅ্যাপ ডটকমের প্রতিষ্ঠাতা তথা সিইও প্রতীক সিংহ বলেন, ‘‘অনেক সংস্থা এখন ব্যবসা বাড়ানোর জন্য আন্তর্জাতিক বাজারেও পা রাখতে চাইছে। সেই উদ্দেশ্যেও পুঁজি সংগ্রহ করছে তারা। কোনও কোনও ক্ষেত্রে অ্যাঙ্কর ইনভেস্টররা পুঁজি তুলে নিয়ে সংস্থা থেকে বেরোতে চাইছেন।’’ সংশ্লিষ্ট মহল অবশ্য মনে করাচ্ছে, আইপিও-য় অস্থিরতা কমাতে কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে সেবি। অ্যাঙ্কর ইনভেস্টরদের শেয়ার ধরে রাখার মেয়াদ বাড়ানোর পদক্ষেপও করতে চাইছে তারা। বাঁধা হবে অধিগ্রহণে কাজে লাগানো পুঁজির ঊর্ধ্বসীমা।