প্রতীকী ছবি।
কৃষকদের জন্য ঢাকঢোল পিটিয়ে দু’বছর আগে প্রধানমন্ত্রী কিসান সম্মান নিধি (পিএম-কিসান) এনেছিল মোদী সরকার। দাবি করা হয়েছিল, ছোট চাষিদের পাশে থাকতেই এমন আর্থিক সুরাহার বন্দোবস্ত। অথচ তথ্যের অধিকার আইনে করা এক প্রশ্নের উত্তরে খোদ কেন্দ্রই জানাল, প্রকল্পটির প্রায় ১৩৬৪ কোটি টাকা চলে গিয়েছে ভুল হাতে। কৃষি মন্ত্রকের তথ্য বলছে, ২০.৪৮ লক্ষ অযোগ্য চাষি এই সুবিধা পেয়েছেন। যাঁদের মধ্যে অধিকাংশই (৫৫.৫৮%) আয়কর দেন। আর বাকিরা প্রকল্পের অন্যান্য শর্ত পূরণ করেন না।
তথ্যের অধিকার আইনে জবাব চেয়েছিলেন যিনি, সেই বেঙ্কটেশ নায়েক জানান, সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী টাকা উদ্ধারের কাজ নাকি শুরু হয়েছে। কিন্তু অনেকের প্রশ্ন, এই অর্থ অযোগ্য ব্যক্তিদের হাতে কেন্দ্র তুলে দিল কী করে? এই দায় কার?
প্রকল্পটি কী
• চার মাসে ২০০০ টাকা করে (বছরে ৬০০০ টাকা) সরাসরি জমা পড়ে চাষিদের অ্যাকাউন্টে।
• যে ছোট চাষির পরিবারের হাতে ২ হেক্টর পর্যন্ত জমি রয়েছে, তাঁরাই টাকা পান।
• মাসে ১০,০০০ টাকার বেশি পেনশন পেলে বা কর দিলে, তা পাবেন না।
• আছে অন্যান্য আরও শর্ত।
তথ্য বলছে
• প্রকল্পে প্রায় ১৩৬৪.১৩ কোটি টাকা গিয়েছে অযোগ্য চাষিদের কাছে।
• তাঁদের মধ্যে ৫৫.৫৮% আয়কর দেন ও ৪৪.৪১% শর্ত পূরণ করেন না।
• প্রথম স্থানে পঞ্জাব (৪.৭৪ লক্ষ ব্যক্তি বা ২৩.১৬%)।
• তার পরে অসম (৩.৪৫ লক্ষ বা ১৬.৮৭%)।
• ২.৮৬ লক্ষ নিয়ে মহারাষ্ট্র তিনে (১৩.৯৯%)।
• গুজরাত (১.৬৪ লক্ষ বা ৮.০৫%) এবং উত্তর প্রদেশ (১.৬৪ লক্ষ বা ৮.০১%) চার এবং পাঁচে।
বিশেষত, যেখানে প্রকল্পের শর্ত হিসেবে বলা হয়েছিল, আয়কর দিলে বা মাসে ১০,০০০ টাকার বেশি পেনশন পেলে এই সুবিধা নেই। চাষির পরিবারের কেউ ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট, আর্কিটেক্ট হলে তা মিলবে না। টাকা পাওয়া যাবে না পরিবারের সদস্য সংবিধান অনুসারে কোনও পদে অতীত বা বর্তমানে থাকলে। আবার সংস্থার হাতে জমি থাকলে অথবা অতীত বা বর্তমানে মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়ক, মেয়র, জেলা পঞ্চায়েতের চেয়ারম্যান, সরকারি কর্মী হলে সুবিধা নেই। তা হলে কি ঠিক নজরদারি ছিল না, উঠছে সেই প্রশ্নও।