প্রতীকী ছবি।
মার্কিন অশোধিত তেলের (ডব্লিউটিআই) মে মাসের বরাতের দাম সোমবার শূন্যের নীচে নামতেই ফের মাথাচাড়া দিয়েছিল প্রশ্নটা। বিশ্ব বাজারে তেল এত সস্তা, কিন্তু ভারতে পেট্রল, ডিজেলের দামে তার ছাপ নেই কেন? বরং দীর্ঘ দিন পেট্রল লিটারে ৭৩.৩০ টাকা ও ডিজেল ৬৫.৬২ টাকায় স্থির। মঙ্গলবারও ডব্লিউটিআই এবং আর এক ধরনের অশোধিত তেল ব্রেন্ট ক্রুডের জুনের বরাতের দর ছিল দু’দশকে ন্যূনতম। যা দেখে কংগ্রেসের রাহুল গাঁধী ও সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরি-সহ বিরোধী নেতাদের প্রশ্ন, বিশ্ব বাজারে তেল আর কতটা নামলে দেশে তার দাম কমাবে কেন্দ্র? করোনা-সঙ্কটে বিপর্যস্ত হওয়া সত্ত্বেও দেশবাসী কেন অশোধিত তেলের দরে ঐতিহাসিক পতনের সুফল পাবেন না? কেনই বা সরকার তাদের মুনাফার ভাগ পৌঁছে দেবে না মানুষের ঘরে?
সরকার পক্ষের যুক্তি, ভারত মূলত ব্রেন্ট ক্রুড কেনে। যা অত নীচে নামেনি। তার উপরে লকডাউনে দেশে উধাও তেলের চাহিদা। ফলে কর খাতে আয় কমেছে কেন্দ্রের। ফলে অশোধিত তেল কিনতে যে টাকা বাঁচছে, তার সুফল ঘরে তুলতে পারছে না সরকার।
‘জলের’ দরে তেল!
• আগাম বাজারে মে মাসের মার্কিন অশোধিত তেল (ডব্লিউটিআই) সোমবার নামে ব্যারেলে শূন্যেরও ৩৭.৬৩ ডলার নীচে। মঙ্গলবার তা কিছুটা উঠে ৫ ডলারের আশেপাশে।
• ডব্লিউটিআইয়ের জুনের আগাম দর মঙ্গলবার নামে ১৬.১৪ ডলারে, ১৯৯৯-র পরে সর্বনিম্ন।
• ব্রেন্ট ক্রুডের জুনের দর নামে ১৮.১০ ডলারে, ২০০১-র পরে সর্বনিম্ন।
• বিশ্ব জুড়ে করোনা মোকাবিলায় আর্থিক কর্মকাণ্ড বন্ধ থাকায় তেলের চাহিদা তলানিতে।
• তার উপরে মজুত ভান্ডার প্রায় পূর্ণ হওয়ায় সঙ্কট তেলের বাজারে।
• ওপেক ও রাশিয়া উৎপাদন ছাঁটতে রাজি হলেও, তা কতটা পতন রুখতে পারবে, তা নিয়ে সন্দেহ থাকছে।
ভারতে দামিই
• ভারতে পেট্রল-ডিজেলের দাম কমার লক্ষণ নেই।
• ১৭ মার্চের পর থেকে দাম সংশোধন (রাজ্যের ভ্যাট ছাড়া) করেনি তেল সংস্থাগুলি।
• কেন্দ্র কেন বিশ্ব বাজারে দাম কমার সুবিধা ক্রেতাকে দিচ্ছে না, তা নিয়ে তোপ দেগেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী ও সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি।
• দাম কমানোর দাবি তুলেছে অল ইন্ডিয়া মোটর ট্রান্সপোর্ট কংগ্রেস।
রাহুল অবশ্য টুইটে বলেন, ‘‘বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দর অপ্রত্যাশিত ভাবে পড়ছে...কখন সরকার দাম কমাবেন?’’ কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালার প্রশ্ন, ‘‘মোদী সরকার চুপ কেন?’’ আর এক নেতা পবন খেরার অভিযোগ, অশোধিত তেলের দর প্রতি এক ডলার কমলে সরকারের ১০,৭১৪ কোটি টাকা লাভ হয়। কেন তার কিছুটা ভাগ তারা আমজনতাকে দিচ্ছেন না! সিপিএমের সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির দাবি, ‘‘এটা সরকারের লাভ করার সময় নয়।’’ তবে এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট স্টাডির অমিত ভাণ্ডারিরও মত, ডব্লিউটিআই-র দরের প্রভাব ভারতে পড়ার কথা নয়। এ দেশ মূলত ব্রেন্ট ক্রুড নির্ভর।
আরও পড়ুন: করোনার ধাক্কায় বরাত হারানোর ভয় রফতানি শিল্পে
আরও পড়ুন: বেতন নিয়ে ধিকিধিকি ক্ষোভ চটকলের অন্দরে
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)