প্রতীকী ছবি
দেশ জুড়ে পেট্রল-ডিজেলের দাম বৃদ্ধি নিয়ে তরজার মধ্যে ক’দিন আগেই তেলমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান এ জন্য দায়ী করেছিলেন বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের চড়া দরকে। বলেছিলেন, সে জন্যই দেশে দাম কমাতে পারছে না সংস্থাগুলি। এ বার কেন্দ্রকে বিঁধতে অশোধিত তেলের দরকেই হাতিয়ার করল কংগ্রেস। বিরোধী দলের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সূরজেওয়ালার কটাক্ষ, মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার সময়ে অশোধিত তেলের যা দর (ব্যারেলে প্রায় ১০৮ ডলার) ছিল, এখন তার অর্ধেক। অথচ বর্তমানে টানা রেকর্ড গড়ছে পেট্রল, ডিজেল। কেন্দ্রকে ‘নির্দয়’ তকমাও দিয়েছে তারা।
করোনা সঙ্কটে বেহাল দেশের অর্থনীতি। বহু মানুষ কাজ হারিয়েছেন। এরই মধ্যে লকডাউনে এবং তার পরেও কার্যত নিয়ম করে জ্বালানির দর বাড়ছে। দু’দিন থমকে থাকার পরে শুক্রবার ফের নতুন লাফ দিয়েছে তা। মুম্বইতে পেট্রল ছাড়িয়েছে লিটারে ৯২ টাকা। ডিজেলও বহু জায়গায় রেকর্ড করেছে। আনাজপাতির দাম যখন সামান্য কমে আমজমতাকে কিছুটা হলেও রেহাই দিয়েছিল, নতুন বছর থেকে তেলের দর চিন্তা বাড়াচ্ছে। বিশেষত ডিজেল সর্বকালীন শিখরে পৌঁছনোয় বাড়ছে পরিবহণ খরচ। যার প্রভাব পড়ছে অন্যান্য পণ্যের দাম এবং খরচেও।
এ দিনই স্টেট ব্যাঙ্কের গবেষণা শাখা জানিয়েছে, ডিসেম্বরে ব্যাঙ্কটির ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে মুদিদ্রব্য, চিকিৎসা সরঞ্জামের মতো পণ্য ও পরিষেবা কেনাকাটার চেয়ে মানুষ তেল কেনায় খরচ করছেন অনেক বেশি। যা চিন্তার কারণ। কর পুনর্গঠনের মাধ্যমে অবিলম্বে তেলের দাম কমানোর আর্জি জানিয়েছে তারা।
অথচ দর কমানো তো দূরের কথা, অতিমারির আবহেই বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেল যখন শূন্যের নীচে নেমে গিয়েছিল, তখন দেশে পেট্রল-ডিজেলে উৎপাদন শুল্ক রেকর্ড বাড়িয়েছে মোদী সরকার। বারবার তা কমানোর দাবি জানালেও কান দেয়নি। উল্টে সরকারি পরিসংখ্যান বলছে এর মাধ্যমে তুলেছে বিপুল অর্থ।
সম্প্রতি সেই পরিসংখ্যান সামনে আসার পরেই তোপের মুখে প্রধানের মন্তব্য ছিল, তেল উৎপাদনকারী দেশগুলি অতিমারির সময়ে উৎপাদন হয় বন্ধ করেছে নয়তো ছাঁটাই করেছে। ফলে দেশে দাম বাড়ছে দর। শুক্রবার সূরজেওয়ালার তোপ, ২০১৪ সালে দিল্লিতে পেট্রল ও ডিজেল ছিল লিটারে যথাক্রমে ৭১.৪৪ ও ৫৫.৪৯ টাকা। এখন তা ৮৫.৪৫ ও ৭৫.৬৩ টাকা। যা বর্তমান মোদী সরকারের নির্দয়তাই প্রমাণ করে।