ফাইল চিত্র।
মোবাইল ফোনের পরিষেবায় খামতির অভিযোগ থাকলে গ্রাহক সংশ্লিষ্ট সংস্থার বিরুদ্ধে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে যেতেই পারেন। জনৈক গ্রাহকের নালিশ নিয়ে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ভোডাফোন আইডিয়ার এক আবেদনের প্রেক্ষিতে সম্প্রতি এ কথা জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
যে ঘটনার সূত্রে এই নির্দেশ, সেটি ২০১৪ সালের। সে বছর ২৫ মে অজয় কুমার আগরওয়াল নামে এক ব্যক্তি আমদাবাদের ডিস্ট্রিক্ট কনজিউমার ডিসপিউটস রেড্রেসাল ফোরামে ভোডাফোনের বিরুদ্ধে পরিষেবায় ত্রুটির নালিশ জানান। বলেন, পোস্ট-পেড সংযোগে তিনি মাসে ২৪৯ টাকার মাসুল দেন। তাঁর মোবাইলের খরচ মাসে গড়ে ৫৫৫ টাকার কাছাকাছি হলেও, ২০১৩ সালের ৮ নভেম্বর থেকে ৭ ডিসেম্বরের মেয়াদে বিল আসে ২৪,৬০৯.৫১ টাকার। সংস্থার বিরুদ্ধে বেশি টাকা নেওয়ার অভিযোগ তুলেই জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে যান তিনি। পরবর্তী মাসগুলিতে বিলে ছাড়ের পাশাপাশি ২২,০০০ টাকা সুদ-সহ ক্ষতিপূরণও দাবি করেন।
শীর্ষ আদালতের বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, সূর্য কান্ত এবং বিক্রম নাথের বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, ১৯৮৫ সালের ইন্ডিয়ান টেলিগ্রাফ আইনের আওতায় সালিশির মাধ্যমে সমস্যা মেটানোর যে কথা বলা আছে, তাতে এই ধরনের অভিযোগের ক্ষেত্রে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে বিচারের এক্তিয়ারকে বাদ দেওয়া হয়নি। ১৯৮৬ সালের (ক্রেতা সুরক্ষা) আইনেও (যা এখন ২০১৯ সালের আইন) সালিশির মাধ্যমে যে কোনও অভিযোগের সমস্যা সমাধানের পথ খোলা ক্রেতার সামনে। তবে সেই পথেই যে সমস্যা মেটাতে হবে, এমন বাধ্যবাধকতা নেই।
টেলিকম সংস্থা বলেছিল, ১৮৮৫ সালের আইনের ৭বি ধারা বেসরকারি পরিষেবা প্রদানকারীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। কারণ তারা ‘টেলিগ্রাফ অথরিটি’ নয়। সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, ২০১৯ সালের ক্রেতা সুরক্ষা আইনের ২(৪২) নম্বর ধারায় ‘টেলিকম সার্ভিসেস’ (টেলিকম পরিষেবা) শব্দটি যোগ করার মানে এটা নয় যে, ১৯৮৬ সালের ক্রেতা সুরক্ষা আইনে টেলি পরিষেবা নিয়ে অভিযোগের প্রতিকার চাওয়ার ক্ষেত্রে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের এক্তিয়ারকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। বরং তার ২(০) ধারায় যে ‘সার্ভিস’ বা পরিষেবা শব্দটি ছিল, তার মধ্যে টেলিকম-সহ সব ধরনের পরিষেবাই চলে আসে। আর টেলিগ্রাফ আইনে যে সালিশি মারফত অভিযোগ মেটানোর কথা বলা আছে, তা-ও ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের এক্তিয়ারকে অস্বীকার করে না। অর্থাৎ প্রতিকার চাওয়ার একাধিক পথ। তার মধ্যে একটি বাছতে পারেন ক্রেতা।