Debt

ধার শোধে সেরার তকমা, তবু ফাঁদেই আটকে বাংলা

এআইপিএফপি বলছে, পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের ধার্য ঋণের সীমা ভেঙেছে বাংলা। ২০১৯-২০ থেকে ঋণ ফের বাড়ছে। তবে ২০১৫-১৬ থেকে ২০২০-২১ সালের মধ্যে ১.৬% কমেছে।

Advertisement

প্রেমাংশু চৌধুরী

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৮:৪০
Share:

মুক্তি মিলছে না পশ্চিমবঙ্গের। প্রতীকী ছবি।

পুরনো ঋণের বোঝা ঘাড়ে এতখানিই চেপে বসে যে, ভাল কাজ করেও তার থেকে পশ্চিমবঙ্গের মুক্তি মিলছে না।

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বামফ্রন্ট সরকারের রেখে যাওয়া ধার নিয়ে নালিশ জানিয়ে আসছেন। এ বার রাজ্যগুলির ঋণ পর্যালোচনা করে দিল্লির ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব পাবলিক ফিনান্স অ্যান্ড পলিসি-র (এনআইপিএফপি) সদ্য প্রকাশিত রিপোর্ট বলছে, ২০১৫-১৬ থেকে ২০১৮-১৯— এই চার বছরে ওই বোঝা কমানোর ক্ষেত্রে সব থেকে ভাল কাজ করেছে পশ্চিমবঙ্গ। তার পরে ঋণ বাড়লেও, ২০১৫-১৬ সালের চেয়ে কম ছিল। তবে এখনও যে পাঁচ রাজ্যের ঘাড়ে ধার সব চেয়ে বেশি, তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ অন্যতম। ফলে পাঁচ টাকা আয় হলে তার এক টাকাই পুরনো ঋণের সুদ মেটাতে বেরিয়ে যাচ্ছে।

তিন মাস আগে আরবিআই বলেছিল, যে ১০টি রাজ্যে জিডিপি-র তুলনায় ঋণের হার সবচেয়ে বেশি, তার মধ্যে বাংলা রয়েছে। এগুলির মধ্যে আবার যে পাঁচটির অবস্থা সব থেকে করুণ, তার মধ্যেও এ রাজ্য অন্যতম। পঞ্চদশ অর্থ কমিশন রাজ্যগুলির ঋণের ঊর্ধ্বসীমা বেঁধেছিল। কিন্তু ২০২০-২১ সালেই পশ্চিমবঙ্গ তার বেশি নিয়েছে। চলতি অর্থবর্ষে ঋণ এবং রাজকোষ ঘাটতি, দুই-ই অর্থ কমিশনের লক্ষ্য পেরোবে বলে অনুমান। এর পর অর্থ মন্ত্রক পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যগুলির ঘাড়ে ঋণের আসল বোঝা কতখানি, তা খোলসা করতে আরও তিন বছর সময় দেবে বলে জানিয়েছে। খয়রাতিতে রাশ টেনেও সেই চাপ কমাতে বলেছে।

Advertisement

এই অবস্থায় অর্থ মন্ত্রকের অধীন এনআইপিএফপি ১৮টি বড় রাজ্যে এ বছরের বাজেট পর্যালোচনা করে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। তাতে বলেছে, ২০১৫-১৬ সাল থেকে চার বছরে ছ’টি রাজ্য তাদের জিডিপি-র তুলনায় ঋণ কমিয়েছে। তা ৩৩.৮৭% থেকে ৩০.৮৮% নামিয়ে সব থেকে সফল বাংলা। নবান্ন সূত্রের বক্তব্য, স্ট্যাম্প ডিউটি থেকে কর আদায় ব্যবস্থার আধুনিকীকরণের ফলে আয় অনেকটা বাড়িয়েছিল রাজ্য। কিন্তু কোভিড তাতে বাধা হয়। তার আগে অর্থনীতির শ্লথ গতির ফলেও আয় কমেছিল।

এআইপিএফপি বলছে, পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের ধার্য ঋণের সীমা ভেঙেছে বাংলা। ২০১৯-২০ থেকে ঋণ ফের বাড়ছে। তবে ২০১৫-১৬ থেকে ২০২০-২১ সালের মধ্যে ১.৬% কমেছে। পঞ্জাবে বেড়েছে ১৫%। প্রতিষ্ঠানের অধ্যাপক সচ্চিদানন্দ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের পুরনো ধার বড় সমস্যা। তার সুদ মেটাতে অনেকখানি চলে যাচ্ছে। যার অর্থ, রাজস্ব আয়ের একাংশ জলে যাওয়া। উন্নয়ন, আর্থিক বৃদ্ধির জন্য খরচের টাকা কমছে।’’ রাজ্যের বাজেট নথি অনুযায়ী, চলতি অর্থবর্ষে ঋণ বাদে রাজস্ব আয়ের ১৯.৭২% লাগবে পুরনো ধারের সুদ মেটাতে। মানে, পাঁচ ভাগের এক ভাগ শুধু ওই খাতেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement