তেলমন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরী। —ফাইল চিত্র।
পশ্চিম এশিয়ায় বাড়তে থাকা অশান্তি ঠেলে তুলছে বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দামকে। ক’দিন আগে যার ব্যারেলে ৭০ ডলারের কাছে নেমেছিল, তা-ই এখন প্রায় ৭৮ ডলার। আরও বৃদ্ধির আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। ফলে এক দিকে ভারতে জোগান নিয়ে তৈরি হচ্ছে উদ্বেগ, অন্য দিকে চড়ছে আমদানি খরচ। তেলমন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরীর আশ্বাস, অশোধিত তেলের দামে নজর রাখা হচ্ছে। বিশ্বে মজুত যথেষ্ট। ফলে চিন্তার কারণ নেই। তবে সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, দেশে পেট্রল-ডিজ়েলের দাম কমার যে আশা তৈরি হয়েছিল, এই পরিস্থিতিতে তা পূরণ হওয়া কঠিন হয়েছে। এখন কলকাতায় আইওসি-র পাম্পে পেট্রল লিটারে ১০৪.৯৫ টাকা আর ডিজ়েল ৯১.৭৬ টাকা।
ভারত-সহ বেশির ভাগ দেশের তেল সংস্থাগুলি ইরান এবং ওমানের মধ্যে থাকা সরু সমুদ্র প্রণালী হরমুজ দিয়েই সৌদি আরব, ইরাক, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী থেকে অশোধিত তেল এবং কাতার থেকে এলএনজি বয়ে আনে। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, ইজ়রায়েলের সঙ্গে হামাস এবং লেবাননে হেজবুল্লার সংঘর্ষ তো চলছিলই। সম্প্রতি ইরান তাতে যোগ দেওয়ায় পশ্চিম এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল থেকেই তেল আমদানি ধাক্কা খেতে পারে। তার উপর ইরান ইজ়রায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরে সে দেশের তেল এবং পরমাণু কেন্দ্রে পাল্টা হামলা চালাতে পারে তেল আভিভ। জবাবে ইরান হরমুজে হামলা করলে তেলের জোগান ব্যহত হবে। আরও বাড়বে দর।
পুরীর দাবি, ভারতের এখনই চিন্তার কারণ নেই। পরিস্থিতি আয়ত্তে। সরকার নজর রাখছে। দেশে তেলের অভাব নেই এবং প্রয়োজন মাফিক তা জোগাড়ও করা হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, পুরী পেট্রল-ডিজ়েলের দাম কমানোর উচ্চবাচ্য করেননি। ভারত মার্চে তেল কিনেছিল ৮৩-৮৪ ডলারে (তখনই দেশে তেলের লিটার ২ টাকা করে কমানো হয়)। সম্প্রতি তা ৭৩ ডলারের কাছে নেমেছে। ফলে পেট্রল-ডিজ়েলের দাম কমার আশা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু ইরান হরমুজের একাংশ বন্ধ করলে বিশ্ব বাজারে দর আরও বাড়তে পারে। সে ক্ষেত্রে দেশেও সুরাহার সম্ভাবনা ক্ষীণ হবে।