মাথাব্যথা বাজারের স্বাস্থ্য, চোখ থাকুক হাতে থাকা শেয়ারে

তেল, ডলার, চলতি খাতে ঘাটতি ও বাণিজ্য ঘাটতি— এখন পর্যন্ত কারওরই মাথা নামানোর লক্ষণ নেই। এর সঙ্গে চলছে শুল্ক নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুঙ্কার।

Advertisement

অমিতাভ গুহ সরকার

শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:৫৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

তেল, ডলার, চলতি খাতে ঘাটতি ও বাণিজ্য ঘাটতি— এখন পর্যন্ত কারওরই মাথা নামানোর লক্ষণ নেই। এর সঙ্গে চলছে শুল্ক নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুঙ্কার। তা সত্ত্বেও গত সপ্তাহের শেষ দু’টি লেনদেনের দিনে মাথা তুলল দুই প্রধান শেয়ার সূচক। চারপাশের আতঙ্ক তেমন গায়ে না মেখে সেনসেক্স এখনও বসে আটত্রিশ হাজারে। ১১,৫০০ অঙ্কের উপরে নিফ্‌টিও।

Advertisement

তবে সূচক যেখানেই থাকুক না কেন, একটু খতিয়ে দেখলেই বোঝা যাবে যে, বাজারকে যতটা সুঠাম দেখা যাচ্ছে আসলে কিন্তু তা নয়। তেল ও ডলারের দাম বাড়ার ঝাপ্টা টের পাচ্ছে বহু সংস্থাই। যার জেরে গত সপ্তাহের প্রথম দিকে বাজার পড়েও ছিল অনেকটা। তবে পরের দিকে মূল্যবৃদ্ধি ও রফতানিতে ভাল খবর আসায় শেষ দু’টি কাজের দিনে বাজার কিছুটা শক্তি ফিরে পায়। ওই দুই দিনে সেনসেক্স বেড়েছে প্রায় ৬৮০ পয়েন্ট।

হাতে গোনা কয়েকটি বড় সংস্থার শেয়ারের দাম বাড়ায় বাজার এতটা উঠে আছে। তবে দর পড়েওছে বহু শেয়ারের। গত ৩১ জানুয়ারির বাজারদরকে শেয়ারে দীর্ঘকালীন মূলধনী লাভ করের হিসেবের ভিত্তি ধরা হবে। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে ওই সময় থেকে সূচক যদিও অনেকটা এগিয়েছে, কিন্তু অনেক শেয়ারের দাম বেশ খানিকটা কমেছে।

Advertisement

অর্থাৎ সূচক যে উচ্চতাতেই থাকুক না কেন, ভিতরে আতঙ্ক রয়েই গিয়েছে। এই কারণে শুধু সেনসেক্স ও নিফ্‌টির দিকে না তাকিয়ে, শেয়ার কেনাবেচার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হবে নিজের শেয়ারের গতিবিধির উপরে নজর রেখে। দাম ভাল পেলে বিক্রি করে লাভ ঘরে তুলতে হবে। আর বাজার পড়লে তা আবার কিনে নেওয়া যেতে পারে। বর্তমান পরিস্থিতিতে এটাই বুদ্ধিমানের কাজ।

এরই মধ্যে অগস্টে খুচরো ও পাইকারি মূল্যবৃদ্ধি নামা কিছুটা হলেও স্বস্তি দেবে বাজারকে। এর জেরে আগামী ঋণনীতিতে সুদ বাড়ানো নিয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ততটা কঠোর না-ও হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। একই সপ্তাহে আর একটি ভাল খবর দিয়েছে অগস্টে রফতানি বৃদ্ধি। বাণিজ্য ঘাটতিও বাড়ায়, কিছুটা চিন্তা থাকছে। কারণ তেল ও ডলারের দাম বাড়ায় এই ঘাটতি আরও মাথাচাড়া দেওয়ার আশঙ্কা প্রবল।

ডলারের দাম বাড়ার সুবিধা অবশ্য ভোগ করছে তথ্যপ্রযুক্তির মতো রফতানি নির্ভর সংস্থাগুলি। অন্য দিকে পেট্রোপণ্য ও আমদানি করা যন্ত্রাংশ-নির্ভর সংস্থা (যেমন রং, গাড়িনির্মাণ ইত্যাদি) এখন বেশ চাপে।

নামী সংস্থা ছাড়াও বাজারকে উঁচু জায়গায় ধরে রেখেছে মিউচুয়াল ফান্ড থেকে টানা লগ্নি। অগস্টে শুধু এসআইপি মারফতই ফান্ডে লগ্নি হয়েছে ৭,৬৫৮ কোটি টাকা। ফান্ড থেকে নাগাড়ে মোটা টাকা বাজারে আসায় বিদেশি লগ্নিকারীরা শেয়ার বিক্রি করা সত্ত্বেও সূচকে তেমন পতন দেখা যাচ্ছে না। তবে একগুচ্ছ নতুন বন্ড ইস্যু মোটা টাকা টেনে নিলে, তার মৃদু প্রভাব পড়তে পারে বাজারে।

(মতামত ব্যক্তিগত)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement