অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র।
একই সঙ্গে অর্থনীতির শ্লথ গতি ও মূল্যবৃদ্ধির চড়া হারের (স্ট্যাগফ্লেশন) প্রভাব যে ভাবে দেশের অর্থনীতিতে চেপে বসছে, তা নিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন বণিকসভার কর্তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বলে জানালেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। মঙ্গলবার নবান্নে অমিতবাবুর সঙ্গে প্রাক্-রাজ্য বাজেট আলোচনায় বসেছিলেন তাঁরা। পরে অর্থমন্ত্রী বলেন, অর্থনীতি যে দিকে যাচ্ছে, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ১৯টি বণিকসভার প্রতিনিধিরা।
অমিতবাবুর দাবি, এমনিতে স্বাভাবিক নিয়মে মূল্যবৃদ্ধি হলে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়। কিন্তু দেশ এখন ঠিক তার উল্টো পথে যাচ্ছে। এক দিকে বৃদ্ধির হার কমছে, অন্য দিকে বাড়ছে মূল্যবৃদ্ধি ও বেকারত্ব। এই পরিস্থিতি থেকে বেরোনোর হাতিয়ার অর্থনীতিতে এখন নেই।
তবে দেশের অর্থনীতির এই হাল হলেও, রাজ্য তার নিজস্ব বৃদ্ধির হার ধরে রেখেছে বলে এ দিন দাবি করেছেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, গত বছর দেশের মধ্যে ১২.৫% বৃদ্ধির হার এক মাত্র পশ্চিমবঙ্গেরই ছিল। আশা, এ বারেও তা ১০ শতাংশের কাছাকাছি থাকবে। অমিতবাবুর বক্তব্য, ‘‘রাজ্যের নিজস্ব মূলধনী ব্যয় ও পরিকল্পনা খাতে খরচ বহুগুণ বাড়ানো হয়েছে। একই সঙ্গে ক্ষুদ্র ও ছোট শিল্পে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি এ বছর প্রায় ৭০,০০০ কোটি টাকা ঋণ দেবে। ফলে বেসরকারি লগ্নিতে সমস্যা, নোটবন্দি ও অপরিকল্পিত জিএসটি রূপায়ণের পরেও রাজ্যের বৃদ্ধি হচ্ছে।’’
পরিকল্পনাহীন ভাবে জিএসটি চালুর ফলে প্রায় ৪৪,০০০ কোটি টাকার কর ফাঁকি হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন অমিতবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘সব রাজ্যের তথ্য নিলে ওই অঙ্ক প্রায় ১ লক্ষ কোটিতে পৌঁছত।’’
অর্থমন্ত্রী জানান, এ দিনের বৈঠকে বেশ কিছু প্রস্তাব দিয়েছেন বণিকসভার কর্তারা। যার মধ্যে রয়েছে সামাজিক সুরক্ষা যোজনায় রাজ্যকে সহযোগিতা করা, ক্ষেত্র চিহ্নিত করে প্রশিক্ষণ দেওয়া, দক্ষতা বাড়ানো, ছোট ও মাঝারি উদ্যোগপতি তৈরির মতো পদক্ষেপে সরকারের সঙ্গে সমান্তরাল ভাবে কাজের প্রস্তাব।