গত ১০ মাস ধরেই ভারত থেকে বেশ কিছু পণ্যের রফতানি কমছে। প্রতীকী ছবি।
বিশ্ব অর্থনীতির সঙ্কটে ঝিমিয়ে থাকা চাহিদা ভারতের রফতানি বাণিজ্যে ধাক্কা দিচ্ছে বহু দিন ধরেই। ডিসেম্বর তা পড়ে সঙ্কোচনের খাদে। রফতানি কমেছিল ১২.২%। জানুয়ারিতে ফের কমল। এ বার ৬.৫৮%। দাঁড়াল ৩২৯১ কোটি ডলারে। আমদানির অঙ্ক তার থেকে অনেক বেশি, ৫০৬৬ কোটি ডলার। তবে জানুয়ারিতে আমদানিও ৩.৬৩% সঙ্কুচিত হয়েছে। ফলে বাণিজ্য ঘাটতি ১৭৭৫ কোটি ডলার ছুঁয়ে এক বছরে সর্বনিম্ন। গত এপ্রিল থেকে ১০ মাসে অবশ্য ঘাটতি বেড়েছে।
বুধবার কেন্দ্রের হিসাব জানিয়েছে, গত ১০ মাস ধরেই ভারত থেকে বেশ কিছু পণ্যের রফতানি কমছে। যেমন, ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য, লৌহ আকরিক, গয়না, দামি পাথর ইত্যাদি। সরকারি মহলের দাবি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও চড়া মূল্যবৃদ্ধি সমস্যায় ফেলেছে বহু দেশকে। এতেই মার খাচ্ছেন রফতানিকারীরা। এ দিন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বলেন, বিশ্ব বাজারের অবস্থা আঁচ করে এগোতে হবে রফতানিকারীদের। সেখানে মন্দারঝুঁকি ও ঝিমিয়ে পড়া অর্থনীতি তাঁদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ। ইঞ্জিনিয়ারিং এক্সপোর্ট প্রোমোশন কাউন্সিল ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান অরুণ কুমার গারোদিয়ার আক্ষেপ, ‘‘সাত মাস ধরে কমছে ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য রফতানি। কারণ আমেরিকা, ব্রিটেন-সহ প্রধান রফতানি অঞ্চলগুলিতে চাহিদা তলানিতে। যুদ্ধ চলছে। চিনেও চাহিদা ঝিমিয়ে। ফলে নাকাল ভারত। এক বছর আগের চেয়ে জানুয়ারিতে এই পণ্য রফতানি কমেছে ৯.৮%।’’
চলতি অর্থবর্ষে এখনও পর্যন্ত দেশের মোট রফতানি অবশ্য বেড়েছে ১৭.৩৩%। তবে তার কারণ মূলত পরিষেবার চাহিদা বৃদ্ধি। যেখানে পণ্য রফতানি বেড়েছে ৮.৫১%, সেখানে পরিষেবায় তা প্রায় ৩০%। তার উপর রফতানির থেকে প্রায় আড়াই গুণ বেশিবেড়েছে আমদানি। ১০ মাসে বৃদ্ধি ২১.৮৯%। এর প্রভাব পড়েছে বাণিজ্য ঘাটতিতে। এপ্রিল-জানুয়ারিতে তা ছুঁয়েছে ২৩,৩০০ কোটি ডলার।
সংশ্লিষ্ট মহল দায়ী করছে রাশিয়া থেকে আমদানি বৃদ্ধিকেও। গত ১০ মাসে তা ৩৮৪% বেড়ে হয়েছে ৩৭৩১ কোটি ডলার। যে সব দেশ থেকে ভারত পণ্য কেনে, তার মধ্যে এক সময়ে ১৮ নম্বরে ছিল তারা। এখন ষষ্ঠ।