আয়কর ফাঁকি দিতে কোটিপতি নন বেশির ভাগ শিল্পপতিই!

জেটলির পূর্বসূরি পি চিদম্বরমও একবার কটাক্ষ করেন, গোটা দেশে যত জন নিজেদের কোটিপতি বলে স্বীকার করেন, তার থেকে বেশি কোটিপতি দিল্লির একটা পাড়াতেই পাওয়া যাবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:৫২
Share:

বাজেট পেশ করতে গিয়ে অর্থমন্ত্রীরা বারবার দুঃখ করেন, সবাই যদি কর ফাঁকি দিতে আয় কমিয়ে দেখান, তা হলে সরকারের কাজ চলে কী করে!

Advertisement

অর্থমন্ত্রীদের হা-হুতাশই সার। ভবি ভোলবার নয়।

আয়কর দফতর আজ ২০১৪-’১৫-য় আয়কর জমার হিসেবনিকেশ প্রকাশ করেছে। ওই বছর দেশের ৫৯,৮৩০ জন নিজেদের কোটিপতি ঘোষণা করেছেন। তার মধ্যে ৩০,৫৬৭ জনই চাকরিজীবী। অর্থাৎ, দেশে কোটিপতি ব্যবসায়ী বা শিল্পপতি মাত্র ২৯,২৬৩ জন। তার আগের বছর, অর্থাৎ ২০১৩-’১৪-য় কোটিপতির সংখ্যা ছিল ৪৮,৪১৭ জন। সেই হিসেবে কোটিপতি বেড়েছে ২৩.৫%।

Advertisement

সরকারি পরিসংখ্যান থেকেই স্পষ্ট, কোটিপতিরা সঠিক আয় জানাতে বিশেষ আগ্রহ দেখান না। বেতনভোগীদের সে সুযোগ কম। আয়কর কর্তারা বলছেন, দেশে বিলাসবহুল গাড়ি বা ফ্ল্যাটের সংখ্যা দেখলেই বোঝা যাবে, ১২০ কোটির বেশি মানুষের দেশে কোটিপতির সংখ্যা আসলে অনেক বেশি।

চলতি বছরের বাজেট পেশ করতে গিয়ে অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি ঠিক এই কথাই বলেছিলেন। তাঁর যুক্তি ছিল, ২০১৫-’১৬-র হিসেব দেখিয়ে তিনি বলেছিলেন, দেশের যে ৭৬ লক্ষ মানুষ নিজেদের আয় ৫ লক্ষ টাকার বেশি বলে ঘোষণা করেছেন, তার মধ্যে ৫৬ লক্ষই চাকরিজীবী, বেতনভোগী। যাঁদের কর ফাঁকির সুযোগ নেই। অধিকাংশ মানুষ কর ফাঁকি দেন বলেই সৎ করদাতাদের উপর বেশি করের বোঝা বাড়ে বলে জেটলি ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। জেটলির পূর্বসূরি পি চিদম্বরমও একবার কটাক্ষ করেন, গোটা দেশে যত জন নিজেদের কোটিপতি বলে স্বীকার করেন, তার থেকে বেশি কোটিপতি দিল্লির একটা পাড়াতেই পাওয়া যাবে।

সাধারণ মধ্যবিত্ত, উচ্চবিত্তদের মধ্যেও আয় কমিয়ে দেখানোর রোগ আছে বলে মনে করেন কর কর্তারা। যার উদাহরণ হল, ১২১ কোটির দেশে মাত্র ৪ কোটি ৭ লক্ষ মানুষ আয়কর রিটার্ন ফাইল করেন। এঁদের মধ্যে প্রায় ৮২ লক্ষ আবার আয়করই দেন না।

এই কর ফাঁকি রুখতেই নরেন্দ্র মোদী নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেন। তাতে কতখানি লাভ হয়েছে, সেই প্রশ্নের নিশ্চিত উত্তর নেই। বিশেষজ্ঞদের অনেকের মত, করের হার কম হলে এবং প্রক্রিয়াগত জটিলতা কমলে করদাতার সংখ্যাও বাড়বে। এখন এক কোটি টাকার বেশি আয় হলে ৩০% কর ছাড়াও ১৫% সারচার্জ দিতে হয়। উল্টোদিকে অর্থ মন্ত্রকের কর্তাদের দাবি, করদাতার সংখ্যা বাড়লেই হার কমানো সম্ভব।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement