প্রতীকী ছবি।
করোনাকালে ব্যাঙ্কের অনুৎপাদক সম্পদ কমাতে গত বছর লকডাউনের সময় থেকে মাস ছয়েক ব্যাঙ্কঋণ শোধের কিস্তি স্থগিত সুবিধা দিয়েছিল কেন্দ্র। পরবর্তী কালে ঋণ পুনর্গঠনের সুবিধা, ক্ষুদ্র-ছোট-মাঝারি সংস্থার জন্য সরকারি গ্যারান্টিযুক্ত ধারের ব্যবস্থা করেও অনাদায়ি ঋণ কমানোর চেষ্টায় নামে তারা। তা সত্ত্বেও চলতি অর্থবর্ষে দেশে ব্যাঙ্কগুলির মোট অনুৎপাদক সম্পদ (এনপিএ) ঋণের সাপেক্ষে ৮%-৯% হতে পারে বলে মনে করে ক্রিসিল। এ বছরে ২% ঋণ পুনর্গঠন-সহ সব মিলিয়ে অনাদায়ি ঋণ ১০%-১১% হতে পারে বলেও মনে করে তারা।
রেটিং সংস্থাটির সিনিয়র ডিরেক্টর এবং ডেপুটি চিফ রেটিংস অফিসার কৃষ্ণন সীতারামনের মতে, মোট ব্যাঙ্ক ঋণের প্রায় ৪০% জুড়ে থাকে খুচরো (বাড়ি-গাড়ি ঋণ) ও ক্ষুদ্র-ছোট-মাঝারি শিল্পের (এমএসএমই) ঋণ। মূলত এই দুই ক্ষেত্রেই আগামী মার্চে গিয়ে বহু ধারের টাকা আদায় না-হয়ে এনপিএ-তে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। খুচরো ক্ষেত্রে অনাদায়ি ঋণ বেড়ে ৪%-৫% এবং এমএসএমই-র ক্ষেত্রে ১৭%-১৮% হতে পারে বলে ধারণা তাঁদের। ক্রিসিলের মতে, ছোট শিল্পের জন্য কেন্দ্র বিভিন্ন ঋণ প্রকল্প আনলেও, আদতে তা অনুৎপাদক সম্পদের হাত থেকে বাঁচতে খুব একটা সুরক্ষা দেবে না ব্যাঙ্কগুলিকে। বরং মূলধনে টান পড়া আটকাতে ঋণ ঢেলে সাজানোর পথে হাঁটতে হতে পারে সংস্থাগুলিকে।
তবে এই অর্থবর্ষে ৯% এনপিএ-র অনুমান গত ২০১৭-১৮ সালের থেকে কম। সে বার ব্যাঙ্কগুলির মাথায় বাজ পড়েছিল তা ১১.২% হওয়ায়। বস্তুত করোনার আগে থেকেই ব্যাঙ্কিং শিল্পের ঘাড়ে চেপেছিল বিপুল অনুৎপাদক সম্পদের বোঝা। এর পরে গত বছর করোনার প্রথম ঢেউয়ে লকডাউনের জেরে রুজিতে টান পড়ায় ঋণ শোধে সমস্যায় পড়েন বহু মানুষ। সুরাহা দিতে কেন্দ্র কিস্তি স্থগিতের সুবিধা আনলেও তার মেয়াদ শেষ হয় ২০২০-র অগস্টে। তার উপরে অবস্থা স্বাভাবিক হওয়ার সময়েই ফের ধাক্কা দিয়েছে অতিমারির দ্বিতীয় ঢেউ। ফলে অনুৎপাদক সম্পদ নিয়ে উদ্বেগ বহালই।