খবরের কাগজ পড়া, মেসেজ করা, রেস্তোরাঁ বাছাই থেকে নতুন শহরে রাস্তা চেনা, গেম খেলা বা ফেসবুকে বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার মাধ্যম এখন মোবাইল অ্যাপ। পাশাপাশি, স্বাস্থ্য পরিষেবার মতো জরুরি ক্ষেত্রেও বাড়ছে অ্যাপের ব্যবহার। আর, সেখানেই ব্যবসার সুযোগ খুঁজতে ঝাঁপাচ্ছে স্টার্ট-আপ দুনিয়া।
চাহিদা-জোগানের সমীকরণ মেনেই ভারতের ১২,৬০০ কোটি ডলারের স্বাস্থ্য পরিষেবা ও সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের জন্য অ্যাপ তৈরি করছে বিভিন্ন স্টার্ট-আপ সংস্থা। এ ধরনের নতুন সংস্থা তৈরির অন্যতম পছন্দের গন্তব্য এখন স্বাস্থ্য ক্ষেত্র।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী স্বাস্থ্য ও সংশ্লিষ্ট শিল্পের বাজারের পরিমাণ ২০১৭ সালে দাঁড়াবে ১৬,০০০ কোটি ডলার ও ২০২০-তে ২৮,০০০ কোটি। এর মধ্যে টেলিমেডিসিনের বাজার ২০২০ সালে ৩.২ কোটি ডলার ছাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে এই বাজার দেড় কোটি।
শুধু বিপুল চাহিদাই নয়। ১০০ কোটির বেশি মোবাইল যোগাযোগের দৌলতে প্রযুক্তির ব্যবহারও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে বলে জানান ডক্টর ইনস্টা অ্যাপের প্রধান অমিত মুঞ্জল। তাঁর দাবি, ভারতে এই প্রথম ভিডিও-মেডিসিন নিয়ে এসেছে এই অ্যাপ। দেশের যে-কোনও প্রান্ত থেকেই এই অ্যাপের মাধ্যমে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া যাবে। ইতিমধ্যেই তিন লক্ষের বেশি মানুষ এটি ডাউনলোড করেছেন বলে সংস্থার দাবি।
প্রযুক্তির হাত ধরে এই বাজার ধরতে ঝাঁপিয়েছে বাড়ি এসে স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার সংস্থা পোর্টিয়া মেডিক্যাল, চিকিৎসার সরঞ্জাম প্রস্তুতকারক ইনঅ্যাকসেল, টিকা দেওয়ার সংস্থা ইন্ডিভ্যাক, রোগীর রেকর্ড সংরক্ষণের সংস্থা লাইভহেলথ-সহ আরও অনেক স্টার্ট-আপ।
তবে বাজারের মাপ বিশাল হলেও ব্যবসার পরিমাণ এক লাফে বাড়বে না বলে জানে স্টার্ট-আপ মহল। ইন্ডিভ্যাকের অমিত অগ্রবালের মতে, এক দিনে মানসিকতা পরিবর্তন হয় না। একই সঙ্গে তাঁর দাবি, খরচ কমানোর পাশাপাশি স্বচ্ছতাও মোবাইল অ্যাপের তুরুপের তাস। যেমন টিকা নেওয়ার আগে ওষুধ তৈরির তারিখ ও মেয়াদ যাচাই করে নিতে পারেন তাঁর গ্রাহকরা।
লাভের অঙ্কে স্বাস্থ্য পরিষেবা অ্যাপের সম্ভাবনা ক্রমশ উজ্জ্বল হচ্ছে বলে দাবি স্টার্ট-আপ শিল্পমহলের। ডক্টর ইনস্টা সম্প্রতি পেয়েছে প্রায় ২৫ লক্ষ ডলার। পোর্টিয়া পেয়েছে প্রায় ৫ কোটি ডলার বিনিয়োগ। লাইব্রেটে এসেছে ১ কোটির বেশি ডলার। ভবিষ্যতে হাতের নাগালে স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দিতে মোবাইল অ্যাপেই তাই ভরসা রাখছে স্টার্ট-আপ শিল্পমহল।