ফাইল চিত্র।
নতুন বছরে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি। তবে এ বার শুধু কলকাতা বা হাওড়া নয়, সেই ইতিহাসের সঙ্গী হবে দক্ষিণবঙ্গের আরও কয়েকটি জেলা। পাইপের মাধ্যমে রান্নার গ্যাস পেতে কলকাতা, নিউটাউনের সঙ্গে দৌড়ে পা মেলাবে দুর্গাপুরের গোপালপুর, হুগলির পাণ্ডুয়াও!
কলকাতা ও হাওড়ার একাংশে রান্নার জন্য পাইপের মাধ্যমে প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহের সূত্রপাত দেড়শো বছরেরও বেশি আগে। তৎকালীন ওরিয়েন্টাল গ্যাস কোম্পানির (পরে রাষ্ট্রায়ত্ত গ্রেটার ক্যালকাটা গ্যাস সাপ্লাই কর্পোরেশন) হাত ধরে। কিন্তু জোগানের অভাবে পরে গতি হারায় সেই পরিষেবা।
এ বার রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা গেলের পাইপলাইন প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যে প্রাকৃতিক গ্যাস জোগানের পথ ফের খুলছে। আপাতত দক্ষিণবঙ্গে কলকাতা-সহ রাজ্যের ১০টি জেলায় গাড়ির জ্বালানি (সিএনজি) এবং রান্নার জন্য বাড়িতে বাড়িতে তা সরবরাহের বরাত পেয়েছে আইওসি-আদানি গোষ্ঠীর কনসোর্টিয়াম (আইওএজিপিএল), হিন্দুস্থান পেট্রোলিয়াম (এইচপিসিএল) এবং বেঙ্গল গ্যাস কোম্পানি (বিজিসিএল)। ইতিমধ্যে কয়েকটি সিএনজি স্টেশন চালু করেছে সংস্থাগুলি। চলছে বাড়িতে গ্যাস জোগানের জন্য পাইপলাইন পরিকাঠামো তৈরির কাজ।
বিজিসিএল সূত্রের খবর, গেলের পাইপলাইন আসতে সময় লাগলেও এসার গোষ্ঠীর কাছ থেকে আপাতত বিশেষ ট্রাকে করে (কাসকেড) কোল বেড মিথেন গ্যাস তাদের কলকাতার সিএনজি স্টেশনগুলিতে পাঠাচ্ছে গেল। একই পদ্ধতিতে জানুয়ারিতে কলকাতার বড় কয়েকটি আবাসন কমপ্লেক্সে (প্রথমে আরবানা) গ্যাস জোগাবে বিজিসিএল। এ জন্য সংশ্লিষ্ট আবাসন চত্বরে ‘ডিকমপ্রেসন ইউনিট’ বসানো হচ্ছে। জুলাইয়ের মধ্যে নিউ টাউন, পাটুলির পাশাপাশি শ্রীরামপুরের কয়েক হাজার পরিবারের তা পাওয়ার কথা।
কাসকেডে নয়, গেলের মূল পাইপলাইনের উপরেই অবশ্য নির্ভর করছে বাকি দুই সংস্থা। আইওএজিপিএলের এক পদস্থ কর্তা জানান, দুর্গাপুরের কাছে গোপালপুরে মোট ৫০ কিলোমিটার পাইপলাইন তৈরির কাজ মাস দেড়েকে শেষ হওয়ার আশা। গেলের পাইপলাইনে গ্যাস এলেই মার্চ-এপ্রিলে গোপালপুরের হাজারখানেক পরিবারকে গ্যাস জোগাতে চায় সংস্থাটি। তাদের পরের লক্ষ্য দুর্গাপুজোর সময়ে দুর্গাপুর শহরাঞ্চলে সেই পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া। প্রথম পর্যায়ে সব ৮-১০ হাজার পরিবারকে গ্যাস জোগানো তাদের লক্ষ্য।
এইচপিসিএলের এক পদস্থ কর্তা জানান, সব কিছু ঠিকঠাক চললে ২০২২ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বরে পাণ্ডুয়ার প্রায় সাত হাজার বাড়িতে গ্যাস সরবরাহ শুরু করবেন তাঁরা। পরের পর্যায়ে গ্যাস পৌঁছবে মগরা, ত্রিবেণী ও ব্যান্ডেলে। নদিয়ার বহু এলাকাও আসবে পরিষেবার আওতায়। এর জন্য হুগলির রাজারামবাটি থেকে পাণ্ডুয়ার দিকে ১০ কিলোমিটার ও বৈদ্যবাটি থেকে আরামবাগের দিকে চার কিলোমিটারের দু’টি পাইপলাইন গড়েছে তারা। সেটি থেকে বাড়ি বাড়ি গ্যাস পৌঁছতে তৈরি হবে পলিইথিলিনের
পাইপলাইন পরিকাঠামো।