উপরন্তু খনি থেকে পাওয়া হিরের অংশ থেকে তৈরি দানা দিয়েই এলজিডি তৈরি হয়। ফাইল ছবি।
খনিতে শুধু নয়, হিরে এখন মিলছে গবেষণাগারেও। আর বিভিন্ন দেশে ধীরে ধীরে বাড়ছে সেই ‘ল্যাব গ্রোন ডায়মন্ড’-এর (এলজিডি) কদর!
হিরের কারবারি-সহ সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, গবেষণাগারে তৈরি হিরের সঙ্গে খনি থেকে তোলা হিরের প্রভেদ কার্যত কিছু নেই। বরং এলজিডির দাম খনির হিরের থেকে প্রায় ৬৫% কম। ফলে ক্রেতাদের বৃত্তের পরিধি আরও বৃদ্ধির সম্ভাবনা বাড়ছে। বাজেটে এলজিডি ব্যবহারে উৎসাহ দিতে সেটি তৈরির জন্য ব্যবহৃত দানার উৎপাদন শুল্ক (৫%) তোলার কথা ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। এই নিয়ে আরও গবেষণার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আইআইটি চেন্নাইকে। বরাদ্দ করা হয়েছে ২৯২ কোটি টাকা।
এলজিডিকে অবশ্য কৃত্রিম হিরে বলতে নারাজ বিশেষজ্ঞেরা। নিউ ইয়র্কের হিরে বিশেষজ্ঞ পল জিমনিস্কির কথায়, ‘‘গবেষণাগারে তৈরি হিরেকে আমরা মানুষের তৈরি হিরে বলি।’’ পূর্বাঞ্চলের জেম অ্যান্ড জুয়েলারি এক্সপোর্ট প্রোমোশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান পঙ্কজ পারেখের দাবি, ‘‘টেস্ট টিউব বেবিকে যেমন কৃত্রিম শিশু বলা যায় না, তেমনই এটিও কৃত্রিম হিরে নয়।’’
উপরন্তু খনি থেকে পাওয়া হিরের অংশ থেকে তৈরি দানা দিয়েই এলজিডি তৈরি হয়। বিশেষজ্ঞেরা জানান, খনিতে যে তাপ এবং চাপে কার্বন হিরেতে পরিণত হয়, গবেষণাগারেও সেই দানার উপরে একই রকম তাপ এবং চাপ প্রয়োগ করে এলজিডি তৈরি হয়। তাই পঙ্কজবাবুর দাবি, ‘‘খনির হিরে এবং এলজিডির উৎস একই। তাই খনির হিরের মতো এলজিডিও শিল্পে ব্যবহার করা হচ্ছে। খনির হিরের মতো এলজিডিরও তাপ সহ্য করার বিশেষ ক্ষমতা থাকায় সেটি মহাকাশযানের জানালা তৈরিতেও ব্যবহার করা হয়।’’
এলজিডির জনপ্রিয়তার মূল কারণ অবশ্য সেটির দাম। পঙ্কজবাবু জানান, খনিতে পাওয়া যে হিরের দাম ১ লক্ষ টাকা, এলজিডির ক্ষেত্রে তা ৩৫,০০০ টাকা। জিমনিস্কির দাবি, নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার ও উৎপাদন বৃদ্ধির ফলে দাম কমছে। যেমন ২০১৫ সালে এলজিডির যা দাম ছিল এখন তার থেকে কমেছে প্রায় ৮০%-৯০%। দীর্ঘ দিন ধরেই এলজিডির পরীক্ষা ও ব্যবহার চলছে ব্রিটেন, আমেরিকা, রাশিয়া এবং সুইডেনে। এখন চিন ও ভারতে উৎপাদন বৃদ্ধিতে জোর দিয়েছে। পঙ্কজবাবু জানান, এলজিডি নিয়ে দোকানে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছেন ক্রেতারা। তা জনপ্রিয় হলে বিদেশি মুদ্রা সাশ্রয় হবে। এখন হিরে আমদানি করে কেটে এবং পালিশ করে রফতানি হয়।